আজ খবর (বাংলা), ব্যাঙ্গালুরু, কর্ণাটক, ২৩/০৮/২০২৩ : দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, অবশেষে বীর বিক্রমে চাঁদের মাটি স্পর্শ করল ভারতীয় মহাকাশযান 'বিক্রম'। ১৪০ কোটি ভারতবাসীর মুখে হাসি ফুটল।
প্রায় ৪০ দিন মহাকাশে পাড়ি দিয়ে আজই ভারতীয় মহাকাশযান চন্দ্রযান ৩এর ল্যান্ডার বিক্রমের চাঁদের মাটিতে সফট ল্যান্ডিং করার কথা ছিল। সেই অনুযায়ী সকলেই চোখ রেখেছিলেন টিভির পর্দায়। ডিডি ন্যাশনাল টিভি চ্যানেল বিক্রমের এই সফট ল্যান্ডিংকে সরাসরি সম্প্রচার করে দেশের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। যদিও ইসরোর ওয়েবসাইট ও ফেসবুকেও সরাসরি সম্প্রচার দেখা যাচ্ছিল। কোটি কোটি দেশবাসী তাই আজ উদ্বিগ্ন মন নিয়ে চোখ রেখেছিলেন টিভি ও ইন্টারনেটের পর্দায়। মনে মনে সকলেই ইসরোর সাফল্য কামনা করে গিয়েছেন। বিভিন্ন ধর্মীয় দেবস্থানে গিয়ে প্রার্থনাও করেছেন।
ঘড়ির কাঁটায় পৌনে ছ'টা বাজতে না বাজতেই নিজের গতি কমিয়ে চাঁদের দিকে এগোতে শুরু করল বিক্রম। ক্রমেই তার থেকে চাঁদের দূরত্ব কমতে শুরু করল। ইসরোর দপ্তরেও তখন টানটান উত্তেজনা। একটা একটা করে পর্ব সাফল্যের সঙ্গে পেরিয়ে আসছে বিক্রম। হাততালিতে ফেটে পড়ছে গোটা ভারত। অবশেষে এল সেই চরম মুহূর্ত। এরপর এক মুহূর্তের মধ্যে নিজেকে সোজা করে সরাসরি চাঁদের বুকে নেমে এল বিক্রম। ভারতের হাতের মুঠোয় চলে এল চাঁদ।
ভারতীয় মহাকাশযান চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করেছে। এর আগে চাঁদের ঐ জায়গায় অন্য কোনো দেশ মহাকাশযান নামাতে পারে নি। সুতরাং দক্ষিণ মেরুতে ভারতই হল প্রথম দেশ, যারা সফলভাবে তাদের মহাকাশযান অবতরণ করাতে পারল। তাছাড়া ভারত বিশ্বের চতুর্থ দেশ যারা চাঁদের মাটিতে সফলভাবে অবতরণ করতে পারল। এই মুহূর্তে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার জোহেন্সবার্গে। তিনিও সেখান থেকে দেশের এই শুভ লগ্নে সাক্ষী থেকে গেলেন। দেশের বিজ্ঞানীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মোদী বলেন, "এই সাফল্য শুধু ভারতের নয়, এই সাফল্য মানব জাতির, মানবিকতার।"
দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে এই মুহূর্তে বিক্রম বিশ্রাম নিচ্ছে চাঁদের মাটিতে। সে বর্তমানে সূর্য থেকে শক্তি সঞ্চয় করছে। আর কিছুক্ষন পরেই বিক্রমের ভিতর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসবে একটি রোভার, যার নাম 'প্রজ্ঞান'। সে চাঁদের বুকে ঘুরে বেড়াবে এবং নানারকম গবেষণামূলক কাজ করতে শুরু করবে। ইতিমধ্যেই বিক্রম প্রচুর ছবি তুলেছে মহাকাশ থেকে এবার প্রজ্ঞান ছবি তুলবে চাঁদের মাটি থেকেই। চাঁদের মাটিতে কি জল আছে ? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজাই এখন প্রজ্ঞাণের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।