![]() |
জলপাইগুড়ি সায়েন্স ও নেচার ক্লাবে চলছে বৈঠক |
আজ খবর (বাংলা), জলপাইগুড়ি, পশ্চিমবঙ্গ, ২৬/০৩/২০২৩ : গরুমারা অভয়ারণ্যের গা ঘেঁষে উপনগরী তৈরির বিরুদ্ধে গর্জে উঠল জলপাইগুড়ি। এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে।
উত্তরবঙ্গের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে গরুমারা অভয়ারণ্য অন্যতম। সারা বছর বহু মানুষ এখানে বেড়াতে যান ডুয়ার্স ভ্রমনের অঙ্গ হিসেবে। সেই গরুমারা অভয়ারণ্যের গা ঘেঁষে একটি বিশাল উপনগরী তৈরি করতে চলেছে নেওটিয়া গ্রূপ। প্রায় ৩৩ একর জমিতে তারা গড়ে তুলতে চাইছে একটি সিমেন্ট কারখানা এবং একটি উপনগরী। প্রজেক্টের কাজ চলছে জোর কদমে। শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা পর্যন্ত সর্বত্র এই প্রজেক্টের বিজ্ঞাপন দেওয়াও শুরু করেছে প্রস্তুতকারী ঐ সংস্থাটি।
এখানেই আপত্তি জানিয়েছে উত্তর বঙ্গের পরিবেশ কর্মীরা। পরিবেশ কর্মীদের বক্তব্য এমনিতেই অরণ্যে গাছ কাটতে কাটতে বন সংকুচিত হয়ে চলেছে। বন্য প্রাণীদের বসবাসের জায়গা কমে যাচ্ছে। ফলে তারা খাবার না পেয়ে লোকালয়ে চলে আসছে। এভাবে বন্ কেটে শহর বানিয়ে দিলে প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি হবে মারাত্মকভাবে।
শুধু তাই নয় ইকো সিস্টেম নষ্ট হয়ে যাবে। অরণ্যের বাইরেও পশুদের অবাধ বিচরণের জন্যে অন্তত 5 কিলোমিটার বাফার জোন থাকা উচিত। যেখানে কোনো রকম নির্মান কাজ করা যায় না। অথচ এ ক্ষেত্রে অরণ্যের এক কিলোমিটার জায়গার মধ্যেই কিভাবে একটি উপনগরী গড়ে উঠতে পারে ? এতে লড়ে বাস্তুতন্ত্র ধাক্ষা খাবে। বন লাগোয়া শহরে বার বার পশুরা ঢুকে আসবে, তারা হয়ত আক্রান্তও হবে। চোরা শিকারির সংখ্যা বেড়ে যাবে। সর্বোপরি যেখানে সবুজের জঙ্গল থাকার কথা, সেখানে কংক্রিটের জঙ্গল গড়ে তোলার অনুমতি বা ছাড়পত্র কিভাবে পাওয়া গেল ?
নেওটিয়া গ্রুপ অবশ্য জানিয়েছে, তারা 20 বছর আগে ঐ জায়গায় জমি কিনে রেখেছিল। তারা আইন মেনেই বৈধভাবে সব অনুমোদন সংগ্রহ করেই কাজে নেমেছে। তাদের নির্মান কাজ চালু আছে।
রবিবার জলপাইগুড়িতে এই প্রজেক্টের বিরুদ্ধে পরিবেশ কর্মীদের আন্দোলনের সূচনা হয়ে গেল। এদিন জলপাইগুড়ি সায়েন্স এন্ড নেচার ক্লাব একটি বৈঠকের আয়োজন করেছিল। যেখানে যোগ দিয়েছিল উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু পরিবেশ কর্মী ও সংগঠন, পরিবেশবীদ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিজ্ঞান মনস্ক মানুষ, প্রকৃতি প্রেমিক সাধারন মানুষ। এই বৈঠক থেকে নেওটিয়ার প্রকল্পের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন পরিবেশ প্রেমীরা এবং অবিলম্বে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। ঐ প্রকল্প বন্ধ না হলে অদূর ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।