আজ খবর (বাংলা), নতুন দিল্লী, ভারত, 21/11/2022 : ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ কর্মসূচি’ হল কেন্দ্রীয় সরকারের এমনই একটি কৃষককল্যাণ কর্মসূচি যার মাধ্যমে যে সমস্ত কৃষকের নিজস্ব জমি রয়েছে তাঁদের সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে বছরে কেন্দ্রীয় সহায়তা বাবদ ৬ হাজার টাকা করে হস্তান্তর করা হয়। কৃষক ও তাঁর পরিবারের আর্থিক প্রয়োজন মেটাতেই এই কেন্দ্রীয় সহায়তার যোগান দেওয়া হয়। তবে, অবস্থাপন্ন কৃষক পরিবারগুলিকে অবশ্য এই আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।
‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ কর্মসূচি’র সূচনা ২০১৯-এর ২৪ ফেব্রুয়ারি। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং এটির সূচনা করেন। বিশ্বের বৃহত্তম সুফল হস্তান্তর কর্মসূচিগুলির মধ্যে এটি হল অন্যতম। সরকারি এই কর্মসূচির মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন কোটি কোটি কৃষক পরিবার। কোনো মধ্যসত্ত্বভোগী বা দালালের এক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা নেই। সংশ্লিষ্ট সুফল গ্রহীতাদের নাম নথিভুক্ত করা এবং তাঁদের ব্যক্তিগত খুঁটিনাটি বিষয় যাচাই বা পরীক্ষা করে দেখার মধ্যে কোনরকম অস্বচ্ছতারও অবকাশ নেই। আধুনিক প্রযুক্তিগত ব্যবস্থায় দ্রুততার সঙ্গেই আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট কৃষক পরিবারগুলির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।
‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ কর্মসূচি’র আওতায় প্রথম কিস্তি প্রদানকালে উপকৃত কৃষকের সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ১৬ লক্ষ। কিন্তু, গত তিন বছরে এই সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১০ কোটির মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এই তিন বছরে ২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি সুফল হস্তান্তরিত হয়েছে সংশ্লিষ্ট কৃষক পরিবারগুলির কাছে। এর মধ্যে আবার ১ কোটি ৬০ টাকারও বেশি হস্তান্তর করা হয় অতিমারীর কারণে লকডাউনের সময় থেকে।
‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ কর্মসূচি’র বাস্তবায়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রয়োগ সফল হওয়ার কারণে কৃষি অনুকূল একটি ডিজিটাল ব্যবস্থা বা মঞ্চ গড়ে তোলার কাজ শুরু করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। কৃষিক্ষেত্রে এটি হয়ে উঠবে আরও একটি কৃষি-বান্ধব তথা কৃষককল্যাণ কর্মসূচি। এই ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট কৃষকদের জমি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হবে রাজ্যগুলি থেকে এবং তা এই নতুন কর্মসূচিটিতে যথাযথভাবে নথিভুক্ত থাকবে। কৃষকদের ই-কেওয়াইসি এবং আধার-ভিত্তিক সহায়তা প্রদানের পদ্ধতিকে আরও ব্যাপকভাবে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক। এর ফলে যদি কোনো কৃষকের মৃত্যু ঘটে বা কোনো কৃষক তাঁর জমি বিক্রি করে দেন, সেক্ষেত্রে সর্বশেষ তথ্য নথিভুক্তির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কৃষক পরিবারগুলিকে সুফল হস্তান্তর কর্মসূচির আওতা থেকে বাদ দেওয়া হবে। ফলে, স্বচ্ছতা বজায় থাকবে সমগ্র প্রক্রিয়াটির মধ্যে।
‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ কর্মসূচি’ প্রকৃত অর্থেই কৃষি ও কৃষককল্যাণে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সংশ্লিষ্ট কৃষকদের কাছে প্রতি চার মাস অন্তর সুফল হস্তান্তরের কাজে গতি ও স্বচ্ছতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে এই কর্মসূচি হল সরকারের সময়োচিত একটি সঠিক ও সফল পদক্ষেপ।