আজ খবর (বাংলা), হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ, 19/11/2022 : শুক্রবার রাত্রি থেকেই সেতু মেরামতির প্রস্তুতি শুরু হাওড়া সিটি পুলিশের। শনিবার দিনেই সকাল থেকে কলকাতা থেকে আসা গাড়ির লম্বা লাইন দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপর।
আজ শনিবার থেকে একটানা দেড় মাসের জন্য বন্ধ সাঁতরাগাছি ব্রিজ। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আলোচনার পর অবশেষে আজ থেকে সাঁতরাগাছি ব্রিজের মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। শুক্রবার মধ্য রাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যারিকেড করা শুরু হয় সাঁতরাগাছি সেতুর এলাকায়। শনিবার সকাল থেকে সাঁতরাগাছি সেতুতে যান নিয়ন্ত্রণ করা শুরুহয়েছে। যান নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ও সম্ভাব্য সমস্ত ব্যবহারযোগ্য রাস্তা ব্যবহার করে যানজট মোকাবিলার যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে। শনিবার সকাল থেকে দেখা গেল কলকাতা থেকে আসা গাড়ির লম্বা লাইন দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপরে। একই চিত্র আন্দুল রোডের। বেলা যত গড়াচ্ছে ততই দীর্ঘ হচ্ছে গাড়ির লাইন। স্বভাবতই শনিবার বহু সরকারী দফতর বন্ধ থাকে। আর সেতু মেরামতির প্রথম দিনে ও শনিবারই যদি এভাবে যানজট তৈরী হয় তাহলে সপ্তাহের কর্মব্যস্ত দিনগুলোতে যানজট আরও বাড়তে পরেই বলে মনে করছেন নিত্য যাত্রীরা। সেক্ষেত্রে টানা দেড় মাস সাঁতারগাছি সেতুর মেরামতি চলাকালীন সকালে নিত্যযাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছতে যথেষ্ট দুর্ভোগ ও হয়রানির মধ্যে পড়তে হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
যদিও ১৯ তারিখ রাত ১১ থেকে ভোর ৫ টা অবধি সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে বলেই গতকাল শুক্রবার জানান হয়েছিল হাওড়া সিটি পুলিশের পক্ষ থেকে। এছাড়াও জানান হয় শনিবার দিন ভোর ৫ থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত কলকাতাগামী একমুখী লেন খোলা রাখা হবে। যে কদিন ব্রীজ মেরামতির কাজ চলবে সেই কদিন কোনো পণ্যবাহী ট্রাক চলতে দেওয়া হবেনা সেতুর উপর দিয়ে।সেক্ষেত্রে পণ্যবাহী ট্রাক রাত্রি দশটার পর কোলকাতার দিক থেকে চলাচল করতে পারবে। সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় সেতুর টোল প্লাজা পেরিয়ে আন্দুল রোড হয়ে জাতীয় সড়কের উদ্দেশ্যে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। অপরদিকে পণ্যবাহী ট্রাক কলকাতায় ঢুকতে রাত্রি দশটার পর নিবেদিতা সেতু হয়ে। তবে শুক্রবার মধ্য রাতে ব্রিজ মেরামতির প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। সেতু সংলগ্ন এলাকাতে ব্যারিকেড বসানোর কাজ শুরু করে দেয় কর্তব্যৰত ট্রাফিক পুলিশ আধিকারিকরা। শনিবার সকালেই সেতুর পরিদর্শনে যান হাওড়া সিটি পুলিশের পুলিশ কমিশনার প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠি। তিনি সেতু সংলগ্ন এলাকার ট্রাফিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন।পুলিশ কমিশনার জানান আন্দুল রোড ও হাওড়া আমতা রোডের যে যে অংশগুলো খারাপ ছিল সেগুলোকে দ্রুততার সঙ্গে মেরামত করে দেওয়া হয়েছে। যাতে এই সেতুর সংস্কারের দরুন হাওড়া শহরে ট্রাফিক ব্যবস্থা মসৃন হয় তাঁর দিকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আন্দুল রোড ও হাওড়া আমতা রোডের বেশ কয়েকটি স্থানে মজুত করা হবে টোইং ভ্যান। যাতে রাস্তায় কোনও গাড়ি খারাপ হয়ে দাঁড়িয়ে গেলে ওই ভ্যানের সাহায্যে দ্রুত তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। এই লক্ষ্যে নয়টি টোইং ভ্যানের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে বলেই জানান পুলিশ কমিশনার। এছাড়াও যদি রাস্তায় গাড়ির চাপ বেশি হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্স যাতে সুষ্ঠভাবে যাতায়াত করতে পারে তাঁর জন্য প্রয়োজন হলে বড় পণ্যবাহী ট্রলারগুলোকে কোনা হাইওয়ে দিয়ে নিবেদিতা সেতু মারফৎ টালা ব্রিজ দিয়ে কলকাতায় প্রবেশ করানো হবে বলেই জানান তিনি।
তবে সেতুর কাজ চলাকালীন যানজট নিয়ন্ত্রণ করে যাত্রীদের সুষ্ঠভাবে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করাই এখন সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা হাওড়া সিটি পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে।