আজ খবর (বাংলা), হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ, 08/07/2022 : দৌড়ে হাওড়া থেকে দার্জিলিং পৌঁছে গেলেন বাংলার রাজকুমার।
"আমার পথ চলাতেই আনন্দ"; না পথ চলাতে নয়, দৌড়ানোতেই আনন্দ। হ্যাঁ বাংলার মানুষের সুস্থতা ও বলিষ্ঠতার বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে দৌড়ে হাওড়া থেকে দার্জিলিং পৌঁছে গেলেন বাংলার রাজকুমার। সময় নিলেন ৬ দিন, অতিক্রম করলেন ৬৬২ কিলোমিটার।
বাবা গণেশ রাম গৌড়, শিকোকাই ক্যরাটের 5th ডান ব্ল্যাক বেল্ট, ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার পরিবেশে বড় হওয়া, স্বাভাবিক ভাবেই খেলাধুলা র প্রতি একটা টান। তবে পারিবারিক আর্থিক অসচ্ছলতা একসময় বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাঁর খেলাধুলায়। এক সময় পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় ক্যারাটে তো দূরঅস্ত, অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় তাকে পড়াশোনাও ছেড়ে দিতে হয়। সেই সময় প্রশিক্ষক মনোরঞ্জন দাস তার প্রিয় ছাত্রের ক্যারাটে প্রশিক্ষণ এর সাথে পড়াশোনার ও দায়িত্ব নেন। জুহুরী তো জহর চিনতে ভুল করে না, এক্ষেত্রে মনোরঞ্জন বাবুও ভুল করেনি। রাজকুমার আজ আন্তর্জাতিক পদকপ্রাপ্ত ক্যারাটে চ্যাম্পিয়ন ও সেইসাথে একজন আ্যাথলিট।
মনোরঞ্জন বাবু জানান, "রাজকুমার অত্যন্ত নিষ্ঠাবান ও কঠোর পরিশ্রমী। সকাল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত অ্যথলেটিক্স এর অনুশীলন, তারপর ৮ টা থেকে ৯.৩০ মিঃ পর্যন্ত চলে ক্যারাটের প্রশিক্ষণ। তার পর স্কুল ও বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যারাটে অনুশীলন।"
রাজকুমার জানান, "হাওড়া থেকে দার্জিলিং দৌড়ানোর আগে বাড়ীতে না জানিয়ে সপ্তাহে ২দিন করে ক্যাটারিং এর কাজ করতে যাবার নাম করে রাতে প্রায় ১০০কিলোমিটার দৌড়াতেন। এর আগে রাজকুমার হাওড়া থেকে দীঘা ১৫৯ কিলোমিটার ২০ঘন্টায়, হাওড়া থেকে তারাপীঠ ভায়া রানীগঞ্জ ৩০১কিলোমিটার ৫০ঘন্টায় ও হাওড়া থেকে মাইথন ২২৪ কিলোমিটার ৩২ ঘন্টায় দৌড়ে অতিক্রম করেন।"
এবছর সে কৃতিত্বের সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। গৌড় বাবু জানান ছেলের সাফল্য তিনি গর্বিত, তিনি চান রাজকুমার ক্যারাটে ও অ্যাথলেটিক্স উভয় ইভেন্ট এই আরো সফল হোক তবে আর্থিক অসচ্ছলতা তার খেলাধুলার প্রধান অন্তরায়, বর্তমানে সে সেনাবাহিনী র পরীক্ষা র প্রস্তুতি নিচ্ছে, তবে তার একটি চাকরির খুবই প্রয়োজন, নাহলে খেলাধুলা চালিয়ে যাওয়া আর সম্ভব হবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তার প্রশিক্ষক মনোরঞ্জন বাবু।