আজ খবর (বাংলা), কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, 22/09/2021 : লকডাউনের সময় থেকেই তীব্র যন্ত্রণার মধ্যে আছে রিটেল সেক্টর এর কর্মীরা। গত বছর ২০২০ সালের মার্চ এপ্রিল মাসে বেতন পায়নি বেশির ভাগ কর্মী।লকডাউনের সময় বিগবাজারের গ্রসারী বিভাগ খোলা থাকলেও বেতন পায়নি। শুরু হয় আন্দোলন।
প্রথমে শোরুমের ভিতরে পরে শোরুমের বাইরে আন্দোলন শুরু হয়। চিঠি দেওয়া হয় ম্যানেজমেন্ট কে। লেবার কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়।কর্মীরা বেতনের সামান্য অংশ পায়। তার পর থেকে ধারাবাহিক লড়াই শুরু হয়। আগষ্ট মাস থেকে অনেকটাই নিয়মিত হয়। বোনাসের দাবীতে আন্দোলন করার ফলে বোনাস ও মেলে।
আবার নূতন আক্রমণ শুরু হয় নভেম্বর মাসে। লিলুয়া বিগবাজার বন্ধ করে দেবে। ৮৫ জন কর্মী কে ছাঁটাই করবে। তার প্রতিবাদে তীব্র আন্দোলন। রোধ হয় ছাঁটাই। বিভিন্ন প্লাটফর্মে আন্দোলন চলেছে।
CITU এর পক্ষ থেকে যেমন ধারাবাহিক আন্দোলন হয়েছে তেমনি আন্দোলন করেছে Future Group Parmanent Employees Union। এই ইউনিয়নটি কোনো কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন এর Affiliation নেয়নি। তবে বিজেপির নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ রেখেই কাজ করত।
ফিউচার গ্রুপ মানে যে শপিং মল গুলি তারা হলো Big Bazaar, Brand Factory, Central Mall, fashion Big Bazaar ( fbb), easy day. এই ব্র্যান্ড গুলির বিভিন্ন শোরুম। এইখানে দু'ধরনের কর্মী আছে এক পার্মানেন্ট ওয়ার্কার দুই ক্যাজুয়াল ওয়ার্কার। permanent worker দের মধ্যে কিছু কর্মী আছে যারা ডাইরেক্ট পে রোলে নেই। অর্থাৎ third party recruitment।
সমস্যা সবারই আছে কম বেশি। তবে third-party পে রোলে যারা আছে তাদের সমস্যা বেশি। ছাঁটায়ের ভয় বেশি। এমনিতেই গতবছর কোন ইনক্রিমেন্ট হয়নি তারপর ট্রান্সফারের হুমকি আছে। সবমিলিয়ে দারুণ যন্ত্রণা।
তার সাথে ফিউচার গ্রুপ কে কিনে নিচ্ছে রিলায়েন্স। যদিও মামলা চলছে তবুও ভয় আছে। কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক। লড়াই জোরদার করতে হবে দরকার শক্ত হাত। চওড়া কাঁধ। কর্মীরা নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছেন সেই ভরসার জায়গায় CITU লাল ঝান্ডা।
তাই আজ Future Group permanent workers permanent employee Union সরাসরি যোগ দিলো CITU তে। শ্রমিক ভবনে আজ এই সভায় উপস্থিত ছিলেন ধর্মতলা,শিয়ালদহ, বারাসাত, বারাসাত ডিসি, লেকমল, হাওড়া অবনি মল, শ্রীরামপুর, কৃষ্ণনগর, খড়্গপুর, নরেন্দ্রপুর মল থেকে কর্মীরা যোগদেন।
ইউনিয়নের রেজুলেশন করে CITU এর affiliation এর জন্য আবেদন করল। উপস্থিত ছিলেন CITU পপশ্চিমবঙ্গ কমিটির সভাপতি সুভাস মুখোপাধ্যায়, সম্পাদক অনাদি সাহু। তাঁরা বলেন, :বর্তমান সময়ে শোষণ তীব্র। CITU সার্বিক লড়াই করবে। ফিউচার গ্রুপের কর্মীদের লড়াইতে আমরা থাকব।"
অনাদি সাহু বলেন, "কর্পোরেটদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে সে রিলায়েন্স হোক বা ফিউচার গ্রুপ।" নতুন করে গঠিত হল কমিটি। কমিটির সভাপতি হলেন CITU নেতৃত্ব ইন্দ্রজিৎ ঘোষ। কার্যকরী সভাপতি শুভজিৎ লোধ। সম্পাদক সুজিত পাল , কোষাধক্ষ্য মোঃ মোস্তাক। নূতন নেতৃত্বের হতে CITU এর লাল ঝান্ডা তুলে দিলেন সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায় সম্পাদক অনাদি সাহু। আজকের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় কর্মীদের স্বার্থে আগামী দিনে ইউনিয়ন ব্যাপক লড়াই করবে। রাস্তায় আন্দোলন হবে। সাথে চলবে আইনি লড়াই।
আগামী দিনে যে দাবী গুলি নিয়ে ইউনিয়ন আন্দোলন করবে,
১)প্রতিবছর ইনক্রিমেন্ট করতে হবে।
২)কোন কর্মীকে একটা স্টোর থেকে অন্য স্টোরে ট্রান্সফার করা যাবে না।
৩) প্রতিটি কর্মীকে নির্দিষ্ট হারে বোনাস দিতে হবে।
৪) লকডাউনের বকেয়া বেতন অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।
৫) কোন অজুহাতে ছাঁটাই করা চলবে না।
৬) আট ঘণ্টার বেশি কাজ অর্থাৎ সপ্তাহে 48 ঘণ্টার বেশি কাজ করলে ওভার টাইম দিতে হবে।
৭) ন্যাশনাল হলিডে বা অন্য কোন ছুটির দিনে কাজ করলে ডবল বেতন দিতে হবে।
রিপোর্ট : মলয় সিনহা