আজ খবর (বাংলা), কাকদ্বীপ, দক্ষিণ 24 পরগণা, 12/08/2021 : আর্থিক অনটনের কারণে মৃত্যুশয্যায় ছেলে। সন্তানকে বাঁচাতে অসহায় মায়ের কান্না।
ছটফটে ছেলেটি আজ বড় শান্ত হয়ে গিয়েছে, আগের মতন স্কুলে যাওয়ার জন্য শারীরিক সক্ষমতা সে হারিয়েছে, অসুস্থ শরীর নিয়ে শুয়ে শুয়ে তার দিন কাটছে বিছানায়। কিন্তু কী কারণে ? এই প্রশ্ন করতেই একরাশ প্রশ্ন যেন ভীর করে আসে।
অসুস্থতার প্রশ্ন করতেই চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে জল, কিছুদিন আগে পর্যন্ত দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার কাকদ্বীপ থানার বুধা খালি অঞ্চলের বিশালাক্ষীপুর বাসিন্দা ১০ বছরের সাগর রানা ইস্কুল, টিউশন এবং বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করত, আর আজ নিস্তব্ধ অবস্থায় বিছানায় পড়ে রয়েছে । বছর তিনেক আগে সাগর রানা স্কুলে ক্লাস চলাকালীন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।
শিক্ষকদের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেদিন সাগর কে সঙ্গে নিয়ে তার বাবা-মা একের পর এক হাসপাতালে ঘুরে বেরিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত তাঁরা জানতে পারেন ছেলের ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত। আর্থিক অনটন থাকা সত্ত্বেও ভিন রাজ্যে গিয়ে ছেলের চিকিৎসা করান তার বাবা মা।
আর সেই চিকিৎসা করাতে গিয়ে সব সম্বল বিক্রি করে দিতে হয় তার পরিবারকে। সাগরের বাবা সুব্রত রানা কামারশালায় কাজ করতেন। কিন্তু লকডাউন এর জেরে বন্ধ রয়েছে সেই কারখানা। কাজ হারিয়ে এখন তিনি রাজমিস্ত্রি জোগাড়ে কাজ করেন, কিন্তু তবু বর্তমান পরিস্থিতিতে এই কাজ এখন আর সেভাবে হয় না। আর তাই কাজ হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে সুব্রত রানা। চিকিৎসকরা জানান তাড়াতাড়ি সাগরের অপারেশন না করলে অবস্থার অবনতি হতে পারে।খরচ প্রচুর, কিভাবে করবেন ছেলের অপারেশন তা জানা নেই রানা পরিবারের। কিন্তু ছেলেকে বাঁচাতে হলে এই অপারেশনই শেষ কথা বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এই পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সাগরের বাবা, অসহায় সাগরের মাও; তিনি আজ নির্বাক হয়ে গিয়েছেন। চোখ ভরা জলে তাঁর একটাই মিনতি আমার সন্তানকে বাঁচান। কিন্তু কীভাবে তা জানা নেই। তিনি শুধু জানেন সবার সহযোগিতায় একদিন সাগর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসবে। অসহায় রানা পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সরকারি বা বেসরকারি কেউ সহজগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে সুস্থ হয়ে ছেলেকে বাড়িতে ফেরাতে পারেন এমনই করুণ আর্তি অসহায় পিতা-মাতার।