আজ খবর (বাংলা), কলম্বো, শ্রীলঙ্কা, ও ফুলিয়া, নদীয়া, ভারত, 09/07/2021: 1986 সাল থেকে নাগলিঙ্গম বা নাগকেশর শ্রীলংকার জাতীয় ফুল হিসাবে মান্যতা পেয়েছে। বিরল এই ফুলের গাছের, আদি নিবাস মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায়। তবে এই গাছ থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমারের বৌদ্ধমন্দির প্রাঙ্গনে দেখা যায় এবং ভারত ও বাংলাদেশেও হাতে গোনা কয়েকটি টিঁকে আছে। ভারতে নাগলিঙ্গমকে "শিব কামান" নামে ডাকা হয়।
এই বৃক্ষের সবচেয়ে আকর্ষনীয় অংশ হলো এর ফুল। ছয় পাপড়ি যুক্ত গাঢ় গোলাপী রঙের অদ্ভুত সুন্দর এই ফুলের পরাগচক্র দেখতে অনেকটা সাপের ফণার মতো। আর সেই কারণেই হয়তো এই ফুলের নাম নাগলিঙ্গম বা নাগকেশর। এই ফুলের বিশেষত্ব হলো প্রায় 35 ফুট লম্বা এই গাছের গুঁড়িতেই ফুল ফল ধরে। এই ফুলের সৌরভ মন মাতানো, গোলাপ ও পদ্মের সংমিশ্রণে এই ফুলের সুগন্ধ মানুষের মনে মাদকতা জাগায়।
সারাবছর অল্প পরিমাণে ফুটলেও গ্রীষ্মকাল হচ্ছে নাগলিঙ্গম ফোটার আসল সময়। এই ফুল সম্পর্কে দ্বিজেন শর্মা তার শ্যামলী নিসর্গ বইয়ে উল্লেখ রেখেছেন। কথিত আছে নিয়মনীতি মেনে এই ফুলের পুজো করলে নাকি মানুষের আর্থিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। এই গাছের ফল বড় আকারের গোল বেলের মতো দেখতে। এই ফল হাতির প্রিয় খাদ্য। কামানের গোলার মতো দেখতে এই ফলের জন্যই এই গাছের ইংরাজি নাম "ক্যাননবল"।
এই গাছের রয়েছে ব্যাপক ঔষধি গুণ। ফুল, পাতা ও বাকলের নির্যাস থেকে অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিসেপটিক ওষুধ তৈরী হয়। নাগলিঙ্গমের আরো দুটি ভিন্ন প্রজাতির নাম হলো নাগেশ্বর ও নাগকেশর। তবে তিনটি আলাদা প্রজাতি হলেও তিনটির বৈশিষ্ট্য কিছুটা একইরকম।
নদীয়ার ফুলিয়া শিক্ষানিকেতন স্কুলে এই গাছের হদিস পেলাম আমরা । শিক্ষানিকেতন স্কুলের শিক্ষিকা স্বপ্না মুখার্জি জানান, 30 বছর আগে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা কাজে যোগ দেওয়ার পর জানতে পারি প্রধান শিক্ষক গোপালবাবু যিনি ঊষাগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা, তিনিই এই গাছটি লাগিয়েছিলেন তাঁর চাকরির প্রথমের দিকে। তার মুখ থেকে শোনা বর্ধমানের রাজবাড়ী, মুর্শিদাবাদের একটি জায়গায় এবং নদীয়ার মধ্যে আমাদের বিদ্যালয় ছাড়া কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই।
রিপোর্ট : মলয় দে, নদীয়া