আজ খবর (বাংলা), মালদহ, পশ্চিমবঙ্গ, ১৩/০৬/২০২১ : ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করার আগে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলো চীনা নাগরিক হান জুনওয়ে (৩০)। তখন সে বাংলাদেশ ছিলো। বাংলাদেশের একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলো ওই চীনা নাগরিক । কোনরকমে দু'দিন কাটিয়ে সেখান থেকে ছুটি নিয়ে সংক্রমিত অবস্থাতেই ভারতে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা চালিয়েছিল ওই চীনা নাগরিক। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি ।
কালিয়াচক থানার মিলিকে সুলতানপুর এলাকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কর্তব্যরত বিএসএফ জাওয়ানেরা তাকে ধরে ফেলে। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই জানতে পেরেছে কেন্দ্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্তারা। ভারতে ভিসা যেহেতু বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। সেজন্য ধৃত ওই চীনা নাগরিক বেশ কয়েকবার নেপাল এবং বাংলাদেশ সীমান্ত হয়েই অবৈধভাবে এদেশে এর আগেও প্রবেশ করেছিলো। কিন্তু এবারে তার সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।
করোনা সংক্রমণ হওয়া সত্বেও কি কারনে তড়িঘড়ি অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করার পরিকল্পনা নিয়েছিলো ওই চীনা নাগরিক, তা নিয়েও কেন্দ্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত শুরু করেছে। যদিও ধৃত ওই চীনা নাগরিকের দিল্লির গুরগাঁও-এ হোটেলের ব্যবসা রয়েছে বলেও জানতে পেরেছে গোয়েন্দা কর্তারা । অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে ভারতে থেকে দিনের-পর-দিন কিভাবে তার সহকর্মীদের সাথে হোটেলের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল ওই চীনা নাগরিক তা জানার পর রীতিমতো হতবাক হয়ে গিয়েছে পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্তারা।
শনিবার ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করার অভিযোগে চীনা ধৃত নাগরিককে মালদা আদালতে পেশ করে কালিয়াচক থানার পুলিশ। ওই চীনা নাগরিকের ছয় দিনের পুলিশি হেফাজতের পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে বিচারক। শনিবার সকাল দশটা থেকেই ওই চীনা নাগরিককে আদালতে তোলার আগে থেকেই পুলিশি নিরাপত্তা মুড়ে ফেলা হয় গোটা এলাকা। দুপুর ২ টা নাগাদ চীনা নাগরিক হান জুনওয়ে (৩০) কে মালদা আদালতে নিয়ে আসে কালিয়াচক থানার পুলিশ। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধৃত চীনা নাগরিককে সাত দিনে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু ছয় দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ১৮ জুন পুনরায় তাকে আদালতে তোলা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, চীনের হুবেই শহরের বাসিন্দা হান জুনওয়ের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে উত্তর প্রদেশে পুলিশের কাছে। করোনা সংক্রমনের মধ্যেও গত বছরের কার এক সহকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ । এরপর তাকে জেরা করে হান জুনওয়ে বিষয়ে জানতে পারে ওই রাজ্যের এন্টি টেরোরিস্ট স্কোয়াডের অফিসারেরা। এরইমধ্যে বাংলাদেশ হয়ে মালদা দিয়েই ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করা ছক তৈরি করেছিল ধৃত ওই চীনা নাগরিক বলে তদন্তে এমন তথ্য উঠে এসেছে । এজন্য বাংলাদেশের সীমান্তে অবৈধ পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল ধৃত ব্যক্তি। বাংলাদেশের সীমান্ত পাচারকারীদের মদতেই ভারতের অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করার রাস্তা খুঁজে নিয়েছিল ধৃত ওই চীনা নাগরিক।
এর জন্য পাচারকারীদের সঙ্গে ভালো টাকার লেনদেন হয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। কিন্তু সীমান্তে বিএসএফ জওয়ানদের কড়া প্রহরার জেরে শেষ রক্ষা হয় নি। ভারতের অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করার সময় মোবাইলে কিসের কিসের ছবি তুলেছিল সেটিও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্তারা। তবে ওই চীনা নাগরিকের মধ্যে করোণা সংক্রমণ রয়েছে কিনা তা নিয়েও সন্দিহান পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্তারা।