আজ খবর (বাংলা), কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ০৫/০৫/২০২১ : তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে প্রথম সাংবাদিক বৈঠক করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ তিনি রাজ্যে করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলাকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিলেন।
সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, "আমাদের রাজ্য থেকে উত্তরপ্রদেশ এবং অন্যান্য রাজ্যে অক্সিজেন নিয়ে চলে যাওয়া হচ্ছে, অথচ আমাদের রাজ্যে অক্সিজেনের অভাব থেকে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে আমি সর্ব প্রথম আমাদের রাজ্যের অক্সিজেন ইন্ডাস্ট্রিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, আমরা আমাদের রাজ্যে উৎপাদিত অক্সিজেন ইন্ডাস্ট্রির কাজে ব্যবহার না করে কোভিড রোগীদের জন্যে ব্যবহার করছি। আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি, আমি বলেছি, আমাদের রাজ্যে ভ্যাকসিন সরবরাহ পর্যাপ্ত নয়, বিনামূল্যে সবাইকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। অক্সিজেন এবং ভ্যাকসিন নিয়ে যেন কেন্দ্র সরকার স্বচ্ছ পরিকল্পনা গ্রহণ করে।"
মমতা বলেন, "রাজ্যে কোভিড পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্যে আরো ১০০টি হাসপাতাল নেওয়া হয়েছে। ৩০০০ আইসিসিইউ বেড বাড়ানো হয়েছে। মোট ৩০ হাজার আইসিসিইউ বেড হয়ে যাবে। রাজ্যে ১৮ বছরের উর্দ্ধে থাকা সবাইকেই ভ্যাকসিন দিতে হবে। ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে সাংবাদিক এবং হকারদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। "
রাজ্যে কোভিড পরিস্থিতি সামাল দিতে মুখ্যমন্ত্রী বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছেন। তিনি বলেন, "মাস্ক পড়তেই হবে। মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বাজারে গোল্লা গোল্লা দাগ মেনে চলতে হবে, সামাজিক দূরত্ব অবশ্যই পালন করতে হবে।বাজার থেকে কিনে আনা দ্রব্যাদি গরম জলে ধুয়ে নেবেন। স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন। যতটা সম্ভব হাত ধুয়ে ফেলবেন সাবান দিয়ে। নিজেদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলবেন।"
প্রশাসনিক দিক থেকেও বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মমতা বলেন, "আগামীকাল থেকে লোকাল ট্রেন বন্ধ রাখা হবে। সরকারি এবং বেসরকারি অফিসে ৫০% কর্মী কাজ করতে পারবেন। বিনোদন, ক্লাব, সুইমিং পুল, জিম , বার, রেস্তোরাঁ, শপিং মল ইত্যাদি বন্ধ থাকবে। বিয়ে বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে ৫০ জন পর্যন্ত জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হবে, কিন্তু সেই জমায়েতের জন্যেও অনুমতি নিতে হবে। এবার রবীন্দ্র জয়ন্তীও পালন করা হবে ছোট করে। রাজ্যে আংশিক লক ডাউন করা হচ্ছে। মুদি দোকান খোলা থাকবে। খোলা থাকবে হোম ডেলিভারি এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্য।"
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বাজার খোলা থাকবে সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এবং বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যে ৭ টা পর্যন্ত। শুধুমাত্র জুয়েলারি দোকান খোলা থাকবে বেলা ১২টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত। ব্যাংক খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত। কাল থেকে লোকাল ট্রেন সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে, মেট্রো ও রাজ্য পরিবহন ৫০% চলবে। কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট ছাড়া রাজ্যে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। বিমানবন্দরগুলোতে থাকবে বাড়তি নজরদারি। যে কোনো ম্যানুফ্যাকচারিং এবং চা বাগানগুলিতে ৫০% কর্মী নিয়ে কাজ চালানো যাবে। জেলায় জেলায় কোভিড ওয়ারিয়ার ক্লাব গঠন করা হবে। রাজ্যে ওয়ার্ক ফর্ম হোম চালু থাকবে।" রাজ্যবাসীকে এবং বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থাকে মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে দান করার জন্যে আবেদন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।