![]() |
মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় |
আজ খবর (বাংলা), কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ৩১/০৫/২০২১ : রাজ্য সরকার না ছাড়ায় রাজ্যের মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন দিল্লীতে যাওয়া হল না। মুখ্য সচিবকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, "গত ২৮শে মে তারিখে রাজ্যের মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যের দায়িত্ব থেকে রিলিজ করার যে চিঠি ভারত সরকার দিয়েছে, তাতে আমি যথেষ্ট অবাক এবং ব্যথিত হয়েছি। ওই চিঠিতে রাজ্য সরকারের দায়িত্ব থেকে ৩১শে মে তারিখের মধ্যে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরিয়ে নিয়ে কেন্দ্র সরকারের কাছে দিল্লীতে গিয়ে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তকে আমি অসাংবিধানিক ও কেন্দ্র সরকারের একতরফা সিদ্ধান্ত বলে মনে করছি।"
মমতা লিখেছেন, "আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্য সরকারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার এই একতরফা নির্দেশ নিয়ে আগে থেকে রাজ্য সরকারের সাথে কোনো রকম আলোচনাও করা হয় নি। এ ক্ষেত্রে ওই অফিসারের সামনে কোনো বিকল্পও রাখা হয় নি। সুতরাং ভারতবর্ষের ১৯৫৪ সালের প্রশাসনিক সার্ভিস রুলের নিরিখে এই একতরফা নির্দেশ অসাংবিধানিক এবং ঐতিহাসিকভাবে অভূতপূর্ব বলে মনে হচ্ছে। কিছুদিন আগে আমার অনুরোধে ভারত সরকার একটি আদেশনামা প্রকাশ করেছিল, যার বলে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মজীবনকে আরও ৩ মাস বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুখ্য সচিবের অবসর গ্রহণের কথা ছিল মে মাসের ৩১ তারিখে। কিন্তু তাঁকে ৩ মাস এক্সটেনশন দেওয়া হয়েছিল। আমাদের রাজ্য কোভিড ১৯-এর দ্বিতীয় প্রবাহে আক্রান্ত হয়েছে, তার মধ্যেই রাজ্যবাসীকে ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের সম্মুখীন হতে হয়েছে। এই দুর্দিনে মানুষ ও বৃহত্তর স্বার্থে আপনাদের সহযোগিতা কাম্য।"
মমতা আরও লিখেছেন, "কিছুদিন আগেই যে অফিসারকে আপনারা রাজ্য সরকারের সেবা করার জন্যে তিন মাসের এক্সটেনশন দিলেন, আমি বুঝতে পারছি না কি এমন হল যে, তাঁকে তড়িঘড়ি রাজ্যের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে দিল্লীতে ডেকে পাঠানো হল ? যদিও আপনাদের একতরফা নির্দেশে বিস্তৃতভাবে কিছু বলা হয় নি যে, একজন অফিসারকে আপনারা যখন তিন মায়ের এক্সটেনশন দিলেন, তাহলে কি কারনে কেন্দ্র সরকার তাঁকে ডেপুটেশন দিয়ে দিল্লীতে সরিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে ! আমি বিশ্বাস করি, এই একতরফা নির্দেশের সাথে কালাইকুন্ডার বৈঠকের কোনো যোগ নেই। যদি যোগ থেকে থাকে তাহলে তার চেয়ে দুঃখের আর কিছু হতে পায়ে না। আমি আপনাকে অনুরোধ করব মানুষের বৃহত্তর স্বার্থেই রাজ্যের মুখ্য সচিবকে যে চিঠি আপনি পাঠিয়েছেন তা তুলে নেওয়া হোক এবং পুনর্বিবেচনা করা হোক। রাজ্যের এই বিপদের সময় রাজ্য সরকার মুখ্য সচিবকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে পারে না, এবং দিচ্ছেও না। দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে মেনে নিয়ে আপনার সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য বলে মনে করি।"