আজ খবর (বাংলা), হিন্দমোটর, হুগলি, পশ্চিমবঙ্গ, ২২/০৫/২০২১ : করোনা মোকাবিলায় অক্সিজেনের প্রয়োজন মেটাতে কনসেনট্রেটর মেশিন তৈরী করলেন হুগলির হিন্দমোটরের মেজর ঋত্বিক পাল ও তাঁর সহযোগী কলকাতা পুলিশের কর্মী সুভাষ দেবনাথ....
এই মুহূর্তে দেশের সর্বত্র অক্সিজেনের চাহিদা ক্রমবর্ধমান। এমন পরিস্থিতিতে অক্সিজেন মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর তৈরী করলেন সেনাবাহিনীর মেজর ঋত্বিক পাল তিনি হিন্দমোটরের বাসিন্দা। বর্তমানে পাঞ্জাবে কর্মরত। কয়েকদিন আগে ছুটিতে বাড়িতে এসেছেন তিনি।করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এ জীবনদায়ী অক্সিজেনের অভাব প্রকট হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি হলে অথবা বাড়িতে থাকলেও অনেকের অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ছে। কিন্তু বাজারে অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে না। অক্সিজেন আছে তো সিলিন্ডার নেই সিলিন্ডার আছে তো অক্সিজেন নেই। এই পরিস্থিতিতে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী কালোবাজারি শুরু করেছে। অক্সিজেন পেতে নাকাল হতে হচ্ছে সাধারন মানুষকে।
মেজর ঋত্বিক ও কলকাতা পুলিশের ডিজাস্টার বিভাগের কর্মি সুভাষ দেবনাথ, দুজনে মিলে ঠিক করেন অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে করোনা রোগিদের পাশে দাঁড়াবেন। কিন্তু সিলিন্ডার কিনতে গিয়ে হয়রানি আর দাম শুনে পিছিয়ে আসেন। মেজর ঋত্বিক নিজে একজন ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ার। তিনি নিজেই অক্সিজেন তৈরী করার পরিকল্পনা করেন।সেই মত কিছু টাকা যোগার করে কাজে নেমে পড়েন তাড়া। হিন্দমোটরের তার এক বন্ধু অমিত দে পুরকায়স্থের যন্ত্র তৈরীর কারখানা রয়েছে। সেখানেই শুরু হয় অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর তৈরীর কাজ। এক সপ্তাহ ধরে কলকাতা থেকে বিভিন্ন পার্টস কিনে এনে তৈরী করে ফেলেন অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর।
মেজর ঋত্বিক বলেন, "সিলিন্ডার কিনতে না পেরে ভাবলাম অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর কিনব।কিন্তু এত দাম বলছে আর কিনতে পারিনি।তাই নিজেরাই কনসেনট্রেটর বানিয়ে ফেললাম।এই মেশিনে বাতাস থেকে ২০ শতাংশ অক্সিজেন নিয়ে বাকি নাইট্রোজেন কার্বনডাই অক্সাইড বের করে দিয়ে অক্সিজেনটাকে স্টোর করা হয়। এক মিনিটে দশ লিটার অক্সিজেন তৈরী করবে এই মেশিন।যেহেতু আমাদের সিলিন্ডারে ভরার লাইসেন্স নেই তাই কোনো স্টোর করা যাবে না সরাসরি বিদ্যুতের সাহায্যে মেশিনটি চলবে আর তা থেকে অক্সিজেন তৈরী হবে। বাজারে যার দাম পঁচাশি হাজার টাকা বর্তমানে সেই দাম এক লাখ দেড লাখ চাইছে। মেজর ও তার সহযোগিরা পঞ্চাশ হাজার টাকায় এই মেশিন তৈরী করে ফেলেছেন।উদ্যেশ্য, এলাকার মানুষের যাতে অক্সিজেনের চাহিদা পূরন হয়।
হিন্দমোটরের মেঘদূত ক্লাবে এই অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটরটি থাকবে। যেখান থেকে একসঙ্গে তিনজন একই সময়ে অক্সিজেন পাবেন। এতে সুবিধা হবে সাধারন মানুষের।মানুষ যাতে অক্সিজেনের অভাবে মারা না যায় তাই প্রয়োজন অনুযায়ী আরো কনসেনট্রেটর তৈরী করতে চাই আমরা বলেন সুভাষ দেবনাথ।
করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ে ঋত্বিক ও তাঁর দুই সহযোগীর সাধারণ মানুষের এই কঠিন সময়ে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন উত্তরপাড়া কোতরং পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান ও বিদায়ী পুরপ্রতিনিধি দিলীপ যাদব। (দেখুন ভিডিও)
রিপোর্ট : রাকেশ চক্রবর্তী