আজ খবর (বাংলা), ক্যানিং, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ, ০১/০৬/২০২১ : এক গৃহবধুকে হত্যা করে প্রমাণ লোপাটের জন্য পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
গত ২৪ মে ক্যানিংয়ের তালদির চাঁদখালি গ্রামে ঘটেছিল এমন জঘন্যতম নৃশংস ঘটনা।বছর ত্রিশ বয়সের গৃহবধু জয়শ্রী নস্কর কে খুন করে কেরোসিন তেল দিয়ে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠে।সেই ঘটনায় গৃহবধুর স্বামী,শ্বশুর,শাশুড়ি সহ সাতজনের নামে ক্যানিং থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মৃত বধুর বাবা সনৎ নস্কর। ঘটনায় ৪ জন অভিযুক্ত পুলিশের হাতে ধরা পড়লেও অন্যান্য তিনজন বেপাত্তা। সেই সমস্ত অভিযুক্তদের গ্রেফতার এবং অপরাধীদের কঠোর শাস্তির দাবীতে আন্দোলনে রাজপথে নামলো স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘রাজাপুর ভগিনী নিবেদিতা মহিলা সমিতি’। সোমবার সকালে তালদি ষ্টেশন,তালদি বাজার এবং তালদি বাসষ্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তা পরিক্রম করে প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয় সমিতির কয়েকশো মহিলা সহ এলাকার স্থানীয় মানুষজন এবং মৃত গৃহবধুর বাবা।প্রতিবাদ মিছিল থেকে আওয়াজ ওঠে অবিলম্বে গৃহবধু ‘জয়শ্রী’র খুনে ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে। যাতে করে মহিলাদের উপর অত্যাচার আর না হয়।
রাজাপুর ভগিনী নিবেদিতা মহিলা সমিতির অন্যতম সদস্যা অঞ্জনা মন্ডল জানিয়েছেন “মহিলাদের উপর এমন জঘন্য অত্যাচার মেনে নেওয়া যায় না।তালদির এই ঘটনা তাপসী মালিক হত্যাকান্ডকে হার মানিয়ে দেবে।অভিযুক্তরা যাতে কোন ভাবে ছাড় না পায় এবং চরম শাস্তি হয় সে বিষয়ে আমরা ওই গৃহবধুর বাপের বাড়ির লোকজনের পাশে থেকে সাহায্য করবো।” অপর এক সদস্যা রসিদা সরদার বলেন ‘প্রতিনিয়ত মহিলাদের উপর অত্যাচার চলছে নৃশংস ভাবে। প্রশাসনের কাছে আবেদন অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিক। তাহলে সমাজে এমন জঘন্যতম ঘটনা কমবে।’
এদিন সকালে বাড়ির সমস্ত রকম সাংসারিক কাজ ফেলে রেখে আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন এলাকার গৃহবধু সুমিতা দাসগুপ্ত, তপতি সরদার,বন্দনা সরকার,সুপর্ণা সরদার, সন্ধ্যা ঘোষ,কৃষ্ণা মন্ডলরা। তাঁদের দাবী ‘তালদির গৃহবধুকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আজ আমরা রাজপথে নেমে আন্দোলনে সামিল হয়েছি,তেমনই আগামী দিনে বাড়ির গৃহবধুরা রাজপথে নেমে বৃহত্তর আন্দোলনে নেমে আমরণ অনশন চালিয়ে যাবো। যতক্ষণ না অভিযুক্তরা শাস্তি পাচ্ছে।অভিযুক্তদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হলে সমাজে মহিলাদের উপর অত্যাচার কমবে এবং নারীরা সুরক্ষিত থাকবে।”
গৃহবধু খুনের ঘটনায় মহিলাদের এমন আন্দোলন কে সমর্থন জানিয়েছেন অপর এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ছায়াতট’।
ছায়াতটের কর্ণধার রাম দেবনাথ জানিয়েছেন ‘আমরা আন্দোলনরত মহিলাদের পাশে রয়েছি। আগামী দিনে যাতে করে সমাজের বুকে এমন চরম নৃশংসতম ঘটনা না ঘটে,অভিযুক্তদের চরম শাস্তি হয় এবং মহিলারা যাতে সুরক্ষিত থাকে তারজন্য আমরা প্রশাসনের উর্দ্ধতম কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাবো।”
রিপোর্ট : কুতুবুদ্দিন মোল্লা
Loading...