আজ খবর (বাংলা), জলপাইগুড়ি, পশ্চিমবঙ্গ, ২৮/০৪/২০২১ : কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের নির্দেশে শহর সংলগ্ন পঞ্চায়েত এলাকায় তিস্তা নদীচর থেকে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ সম্পন্ন করলো জেলা প্রশাসন।
বুধবার সকাল থেকেই জুবিলী পার্ক সংলগ্ন নদীচর জবরদখল মুক্ত করতে অভিযানে নামে প্রশাসন ও পুলিশ।ভাঙা পড়ে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা কয়েকটি রেস্তোরা ও বেশ কিছু বসতবাড়ি।এদিনের অভিযানে নেতৃত্ব দেন সদর মহকুমা শাসক সুদীপ মিত্র।সাথে ছিলেন ডিএসপি সমীর পাল, কোতয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার,সেচ দপ্তরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার শান্তনু ধর প্রমুখ। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে হাজির ছিল বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ।
এদিন অবৈধ নির্মাণ ভাঙা শুরু হতেই স্থানীয়রা তাদের গবাদী পশু ও নিত্য ব্যবহৃত সামগ্রী সরিয়ে নিয়ে যান।অনেক মহিলাকেই কাঁদতে দেখা যায়। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, জুবিলী পার্কে বিচারপতিদের বাংলো হওয়ার সময় কয়েকটি কাঁচা বাড়ি ভাঙা পড়েছিল।তারা এখানে ঘর বানিয়েছিলেন।ফের তাদের উচ্ছেদ করা হল। প্রশাসন আরও বেশি সময় দিলে সকলের সুবিধা হত।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, মঙ্গলবার সার্কিট বেঞ্চের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে।এরপর এদিন সাতসকালেই অভিযান চালায় প্রশাসন।করোনাকালে গভীর রাত পর্যন্ত তিস্তাচরে থাকা অবৈধ রেস্তোরাগুলোতে ব্যাপক জনসমাগম হত বলে অভিযোগ। এরফলে সংক্রমণের আশঙ্কাও ছিল জনমানসে। এছাড়া তিস্তাচরের ওই রেস্তোরাঁগুলো নিয়ে শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনের। তিস্তা বাঁধের ওপর দিয়ে বেপরোয়া বাইক চালনার অভিযোগও রয়েছে।
অত্যধিক জনসমাগম ও কোলাহলে পরিযায়ী পাখিদের সমস্যা হচ্ছিল বলেও অভিযোগ। এবিষয়ে স্যুয়ো-মুটো মামলা করে আদালত। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ রায়দান করেন। জানা গিয়েছে,২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করে বুধবারই প্রশাসনকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। তিস্তা নদী ও চরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে ও করোনা সংক্রমণ রুখতেই আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল এলাকায় প্রচার চালানো হয়।এরপর আজ সকালে অভিযানে নামে প্রশাসন। এবিষয়ে এদিন সকালে কোন মন্তব্য করতে চাননি সদর মহকুমাশাসক। তবে প্রশাসন সূত্রের খবর,আদালতের নির্দেশ মেনে এই কাজ পালন করছেন তাঁরা।
রিপোর্ট : অরুণ কুমার, শিলিগুড়ি
