ঘোর অনিশ্চয়তার পথে বাঁকুড়ার টেরাকোটা শিল্প - আজ খবর । দেখছি যা লিখছি তাই । ডিজিটাল মিডিয়ায় অন্যতম শক্তিশালী সংবাদ মাধ্যম

Sonar Tori


ঘোর অনিশ্চয়তার পথে বাঁকুড়ার টেরাকোটা শিল্প

Share This

ঘোর অনিশ্চয়তার পথে বাঁকুড়ার টেরাকোটা শিল্প


আজ খবর (বাংলা), বাঁকুড়া, পশ্চিমবঙ্গ, ০২/০৪/২০২১ : পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও ভবিষ্যতের কথা ভেবে চোখে অন্ধকার দেখছেন বাঁকুড়ার টেরাকোটা শিল্পীরা। 

বাঁকুড়ার টেরাকোটা ও ডোকরা শিল্পের জনপ্রিয়তা দেশজুড়ে থাকলেও, এই শিল্পের তেমন প্রসার ঘটেনি বিগত দিনগুলিতে। ফলে এই বিশেষ শিল্পকর্ম নিয়ে দেশ এবং বিদেশে সেভাবে জনপ্রিয়তা তৈরিই হয় নি এখনো পর্যন্ত, যতটা হওয়া  উচিত ছিল। বাঁকুড়ার টেরাকোটা  এক অন্যান্য শিল্পকলা, যা আমরা কলকাতায় শীতকালে কিছু মেলায় দেখতে পাই। হয়ত পছন্দ করে কিছু কিনেও নিয়ে আসি বাড়িতে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। এর ফলে বহু শিল্পী নিজেদের এই অন্ন্য শিল্পকর্ম ছেড়ে অন্য কোনো কিছুকে জীবন জীবিকলা হিসেবে বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন।

বাঁকুড়ার পাঁচমুড়া অঞ্চলে  আর মাত্র ৮০টি পরিবার টিঁকে  আছে টেরাকোটা শিল্পকে জীবিকা করে। কিন্তু এই অসামান্য শিল্পকে জীবন জীবিকা করে বেঁচে থাকতে হলে এইসব শিল্পীদের সামনে রয়েছে বেশ কিছু কষ্টকর চ্যালেঞ্জ। কি সেই কষ্টকর চ্যালেঞ্জ ? 

প্রথমত, টেরাকোটা শিল্পকর্মের জন্যে চাই বিশেষ এঁটেল মাটি। পাঁচমুড়া গ্রাম থেকে অন্তত ৩-৪ কিলোমিটার দূরের জমিতে পাওয়া যায় সেই এঁটেল মাটি।  মোটামুটি বিঘা খানেক জমি কিনতে হয় অন্তত দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা দিয়ে। সেই এঁটেল মাটি দিয়েই টেরাকোটা শিল্পকর্ম করা হয়। খুব বেশি হলে ২ বছর চলে ওই এক বিঘা মাটি দিয়ে। তারপর আবার কিনতে হয় এক বিঘা জমি। সব সময় যে আবার সেই জমি পাওয়া যাবেই, তেমন কোনো কথাও  নেই। অনেক সময় জমি মালিকরা বিক্রি করতে চান না তাঁদের জমি।

দ্বিতীয়ত, সব সময় শিল্পের জন্যে অর্ডার পাওয়া যায় না। ক্রেতার অভাব লেগেই থাকে সারা বছর। এই অঞ্চলের মানুষ ইন্টারনেট ঘাঁটতে অভ্যস্ত নন, তাই দূর দূরান্তের অর্ডার সরাসরি তাঁদের কাছে পৌঁছায় না। তাছাড়া জল এবং বিদ্যুৎ-এর অভাবও আছে। শিল্পী পরিবারগুলি যথেষ্ট দরিদ্র এবং অনেক সময় ব্যাংক থেকেও খুব একটা সহযোগিতা পান না।  অনেক ক্ষেত্রে সমবায় গড়ে শিল্পকর্ম বিক্রি করতে হয়।

তৃতীয়ত, যাও বা মাল তৈরি হল, সেইসব পণ্য ঠিকমত মজুত করা যায় না অনেক সময়। অনেক শিল্পকর্ম বিনষ্ট হয়ে যায়। তারপর অর্ডার অনুযায়ী মাল পাঠাতে গেলে সেইসব শিল্পকর্মগুলিকে ঠিকমত প্যাকিং করা যায় না। এর জন্যে প্যাকিং বাক্স, খড় ইত্যাদি লাগে। বিক্রির জন্যে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মেলাগুলির ওপর নির্ভর করে থাকতে হয়।কোনো উন্নত বিপণন ব্যবস্থাও নেই। শুধু তাই নয়, শহরাঞ্চল থেকে যে এঁদের গ্রামে গিয়ে কোনো ব্যবসায়ী শিল্পীদের সাথে গিয়ে যোগাযোগ করবেন, তার উপায়ও প্রায় নেই বললেই চলে। কারন এঁদের গ্রামে দিনে একটি মাত্র বাস চলাচল করে।বর্ষাকালে সেটিও অনিয়মিত হয়ে পড়ে। 

সব মিলিয়ে বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে বাঁকুড়ার টেরাকোটা শিল্প। সরকারি বদান্যতা সামান্য কিছু জুটলেও তা শিল্পটিকে চিরকালের জন্যে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে অপ্রতুল।  তাই ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছেন বাঁকুড়ার আজকের টেরাকোটা শিল্পীরা।

Loading...

Amazon

https://www.amazon.in/Redmi-8A-Dual-Blue-Storage/dp/B07WPVLKPW/ref=sr_1_1?crid=23HR3ULVWSF0N&dchild=1&keywords=mobile+under+10000&qid=1597050765&sprefix=mobile%2Caps%2C895&sr=8-1

Pages