আজ খবর (বাংলা), নন্দীগ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর, ১০/০৩/২০২১ : হঠাৎ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গুরুতর আহত হলেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন হলদিয়ায় নিজের মনোনয়ন পেশ করতে। সেখান থেকে তিনি ফিরে আসেন নন্দীগ্রামেই। ফিরে এসে তিনি একটি শিব মন্দিরে পুজো দিতে যান। সেই মন্দিরে পুজো দিয়ে বের হওয়ার সময় হঠাৎ ধাক্কাধাক্কিতে তাঁর পায়ে চোট লেগেছে বলে জানা গিয়েছে। তাঁর পায়ের আঘাত বেশ যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠেছে বলে জানা যাচ্ছে, সেইসঙ্গে তিনি মাথাতেও খানিকটা আঘাত পেয়েছেন। আজ রাত্রে মমতার নন্দীগ্রামেই থাকার কথা ছিল। কিন্তু তড়িঘড়ি তাঁকে কলকাতায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। গাড়িতে চালকের পাশের আসনে উঠে বসেছিলেন মমতা, সে সময় সাংবাদিকরা তাঁকে বারংবার প্রশ্ন করছিলেন, কিভাবে ঘটল এমন ঘটনা ?
স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল, মমতা তখন যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন। সেই সময় তাঁকে ফের সামনের আসন থেকে নামিয়ে পিছনের আসনে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু পিছনের বসে থাকতে পারেন নি তিনি। পিছনের আসনেই শুয়ে পড়েন। তাঁর আঘাত গুরুতর হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে, সেই কারণেই কোনোরকম ঝুঁকি না নিয়ে তাঁকে কলকাতায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। তবে কলকাতায় এনে তাঁকে হয়ত সরাসরি হাসপাতালেও ভর্তি করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁকে নিয়ে নন্দীগ্রাম থেকে রওনা হয়ে গিয়েছে কয়েকটি গাড়ির একটি বড় কনভয়। এ মুহূর্তে মমতার একটু জ্বর এসে গিয়েছে। গোটা ঘটনায় অভিযোগ উঠে এসেছে ভীড়ের মধ্যে জনা পাঁচেক লোক ছিল, যারা ষড়যন্ত্র করেই তাঁকে জখম করেছে। তাঁর সঙ্গে স্থানীয়ভাবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল না।
এই ঘটনায় হতবাক হয়ে গিয়েছেন সকলেই। কেননা সবাই জানেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান। আজ সারাদিন তাঁকে ঘিরে রেখেছিলেন প্রচুর পুলিশ কর্মী। যা নিয়ে বিজেপির তরফে নির্বাচন কমিশনে আভিযোগ পর্যন্ত জানানোর কথা ভাবা হয়েছিল। এত পুলিশ প্রহরা থাকা সত্ত্বেও কিভাবে তিনি ধাক্কাধাক্কির মধ্যে কিভাবে চলে গেলেন এবং এতটা আঘাত পেলেন সেটাই ভাবাচ্ছে সকলকে। তবে কি পুলিশের মধ্যেই কোনোরকম গাফিলতি ছিল ? কিভাবে মমতার মত একজন হাই প্রোফাইল নেত্রীর কাছাকাছি কেউ পৌঁছে যেতে পারল, এবং ধাক্কায় মারতে পারল সেটা একেবারেই পরিস্কার নয়।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, "এই মুহূর্তে আমি ইন্দোরে আছি। কি হয়েছে তা আমি বিস্তারিতভাবে জানি না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিঃসন্দেহে একজন লড়াকু নেত্রী। তিনি যে আন্দোলন করেছেন তাকে কেউই অস্বীকার করতে পারবে না। তবে দীর্ঘদিন তিনি নন্দীগ্রামের দিকে ফিরেও তাকান নি। সেখানে তিনি কোনো উন্নয়ন করেন নি। উল্টোদিকে শুভেন্দু অধিকারী মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র। তাঁর কাছে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার জন্যেই মমতা সহানুভূতি কুড়িয়ে নিতে চাইছেন কিনা তা দেখতে হবে। তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।"