আজ খবর (বাংলা), নতুন দিল্লী, ভারত, ২৪/০৩/২০২১ : ভারতীয় রেল সমস্ত যাত্রীর সুরক্ষিত, নিরাপদ ও আরামদায়ক রেল সফরে অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই, যাত্রীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার পাশাপাশি, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বন্দোবস্ত করা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যে রেল সফরকে আরও সুরক্ষিত ও আরামদায়ক করে তুলতে ভারতীয় রেল একগুচ্ছ ব্যবস্থা নিয়েছে। এগুলি হ’ল –
কম সুরক্ষিত ও সুনির্দিষ্ট রুটগুলিতে যাতায়াতকারী ট্রেনে রেল সুরক্ষা বাহিনী থাকে। এছাড়াও, সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সরকারি রেল পুলিশ প্রয়োজনীয় সুরক্ষার দায়িত্ব পালন করেন। ৬৮৬টি রেল স্টেশন ও ২ হাজার ৯৩১টি কামরায় নজরদারি ক্যামেরা বা সিসিটিভি বসানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে নজরদারি ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে পর্যায়ক্রমে নিরাপত্তা পরিকল্পনা কার্যকর করা হচ্ছে।
রাজ্য পুলিশ/রাজ্য রেল পুলিশ, কেন্দ্র ও রাজ্যস্তরীয় গোয়েন্দা সংস্থা তথা অসামরিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে নিরাবচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখা হয়। সবধরনের অভাব-অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তিতে হেল্পলাইন নম্বর ১৩৯ চালু করা হয়েছে। সারা ভারতে এই নম্বর চালু রয়েছে। এছাড়াও, রেল মন্ত্রক রেল মদত ব্যবস্থা চালু করেছে। নবনির্মিত ইলেক্ট্রিকাল মাল্টিপল ইউনিট (ইএমইউ) কামরা এবং কলকাতা মেট্রো বাতানুকূল রেকগুলিতে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যোগাযোগ এবং ক্লোজসার্কিট টেলিভিশন সার্ভাইলেন্স ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
প্যাসেঞ্জার রিজার্ভেশন সিস্টেম, অসংরক্ষিত টিকিট ব্যবস্থা, অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিনের মাধ্যমে সংরক্ষিত ও অসংরক্ষিত টিকিট সংগ্রহের সুবিধা চালু হয়েছে। এছাড়াও, রাষ্ট্রায়ত্ত আইআরসিটিসি যাত্রী সুবিধার্থে রেলকানেক্ট মোবাইল অ্যাপ, ইউটিএসঅন মোবাইল অ্যাপ, যাত্রী টিকিট সুবিধা কেন্দ্র, যাত্রী সাধারণ টিকিট বুকিং সেবক পরিষেবা চালু করেছে। অতিরিক্ত যাত্রী ভিড় সামাল দিতে ট্রেনে অপেক্ষামান তালিকায় থাকা যাত্রীদের বিকল্প ট্রেনে যাত্রার সুবিধার্থে স্টেশনে গণজ্ঞাপন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এমনকি, কিছু ট্রেনে অতিরিক্ত কামরা সংযোজন করে যাত্রী ভিড় সামাল দেওয়া হচ্ছে।
ভারতীয় রেল পর্যায়ক্রমে ট্রেনের সমস্ত প্রচলিত কামরা পাল্টে আধুনিক লিঙ্ক হফম্যান বুশ (এলএইচবি) শ্রেণীর কামরা সংযোজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০১৮-১৯ থেকে ভারতীয় রেলের উৎপাদন ইউনিটগুলিতে এলএইচবি শ্রেণীর কামরা নির্মাণ শুরু হয়েছে। বর্তমানে ৬৪৭ জোড়া ট্রেনে এ ধরনের কামরা রয়েছে।
নতুন দিল্লি – বারাণসী তথা নতুন দিল্লি – শ্রীমাতা বৈষ্ণোদেবী কাটরা রুটে অত্যাধুনিক বন্দেভারত ট্রেন পরিষেবা শুরু হয়েছে। হামসফর, তেজস, অন্ত্যোদয়, উৎকৃষ্ট ডবলডেকার এয়ারকন্ডিশন যাত্রী, মহামানার মতো প্রিমিয়াম শ্রেণীর ট্রেন পরিষেবা চালু হয়েছে।
সম্প্রতি ভিস্টাডোম কামরা বেশ কিছু ট্রেনে সংযোজন করা হয়েছে। এর ফলে, যাত্রীরা সফরের সময় আশেপাশের প্রাকৃতিক শোভা দেখতে পাচ্ছেন। উৎকৃষ্ট কর্মসূচির আওতায় গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় রেল মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের ৪৪৭টি রেকের মানোন্নয়ন করেছে। স্বর্ণ কর্মসূচির আওতায় রাজধানী ও শতাব্দী ট্রেনের ৬৫টি রেকের মানোন্নয়ন করা হয়েছে। এর ফলে, প্রতিটি কামরা আরও আরামদায়ক ও সুসজ্জিত হয়ে উঠেছে।
স্মার্ট পাবলিক অ্যাড্রেস ও প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেমের মতো অত্যাধুনিক ব্যবস্থা সম্বলিত ৬৩টি স্মার্ট কামরা বিভিন্ন ট্রেনে সংযোজন করা হয়েছে।
স্টেশনে এবং চলাচলের সময় শব্দের তীব্রতা ও বায়ু দূষণ কমাতে এন্ড-অন-জেনারেশন ট্রেনগুলিকে হেড-অন-জেনারেশন পদ্ধতিতে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এরফলে, স্টেশনে প্রবেশ ও প্রস্থানের সময় জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রচলিত কামরাগুলিতে পুরনো আলোকিতকরণ ব্যবস্থার পরিবর্তে আধুনিক ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এলইডি বাতির ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে।
ভারতীয় রেল দেশের ৬৮৬ টি স্টেশনে এবার ক্লোজ সার্কিট টেলিভিশন ক্যামেরা স্থাপন করেছে। এই ক্লোজসার্কিট টেলিভিশন ক্যামেরার মাধ্যমে স্টেশনগুলিতে অনলাইন পর্যবেক্ষণ ছাড়াও যাত্রী টিকিট সংরক্ষণ কেন্দ্রগুলিতে নজরদারির ব্যবস্থা করা যাবে। এর ফলে স্টেশনগুলিতে বা যাত্রীদের টিকিট সংরক্ষণ কেন্দ্র গুলিতে কোন বেআইনি কার্যকলাপ হলে তা সঙ্গে সঙ্গে নিরূপণ করা সম্ভব হবে।