আজ খবর (বাংলা), চামোলি, উত্তরাখন্ড, ০৭/০২/২০২১ : ভয়ঙ্কর প্রলয়ে বিধ্বস্ত উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলা। আজ তপোবনের কাছে হঠাৎ করেই তুষারধ্বসের কারনে মেঘ বিস্ফোরণের ঘটে, যার ফলে অলকানন্দা নদীতে হড়পা বান নেমে আসে। তীব্র গতিতে তুমুল জলরাশির ঢল নেমে আসতে থাকে অলকানন্দা নদী দিয়ে। বড় বড় বোল্ডার ভাসিয়ে নিয়ে বাঁধের পাঁচিল নিমেষে উড়িয়ে নিয়ে প্রচুর জলরাশি হুড়মুড় করে নিচে নামতে শুরু করে।
উত্তরাখণ্ডের প্রলয়ে আজ বেশ কয়েকজন মানুষ এবং অনেকগুলি পশু প্রাণ হারিয়েছে। আকস্মিক এই হড়পা বানের জেরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনার খবর পেয়েই সেখানে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী ত্রিভেন্দ্র সিং রাওয়াত। উদ্ধারকাজে নামানো হয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও ইন্দো টিবেট বর্ডার পুলিশের জাওয়ানদের। তবে এই মুহূর্তে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে, এবং অলকানন্দা নদী দিয়ে জলের স্রোতের তীব্রতা অনেকটাই কমে গিয়েছে। পাউরি গাড়োয়ালের শ্রীনগরেও অনেক নিচ দিয়ে বইছে অলকানন্দার জল।
যে সময় আজ এই বিপর্যয় ঘটে, সেই সময় ঘটনাস্থলে অন্তত ১০০ জন শ্রমিক কাজ করছিল, তাদের মধ্যে ৯ বা ১০ জন মারা গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা গিয়েছে। আজ রবিবার হওয়ায় শ্রমিকদের সংখ্যা ছিল কম।আলকানন্দায় ১৮০টি মেষ ও ছাগল জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। এছাড়াও পাঁচজন স্থানীয় মানুষও প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে দুজন ছিলেন মেষপালক এবং তিনজন ছিলেন মহিলা। এঁরা প্রত্যেকেই সেখানে ঘাস কাটছিলেন। মৃতদের নিকট আত্মীয় পরিজনদেরকে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ত্রিভেন্দ্র সিং রাওয়াত। কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হবে আরও ২ লক্ষ টাকা করে।
তপোবন এলাকায় মোট ১৬ জন একটি সুড়ঙ্গের মধ্যে আটকে পড়েছিলেন, সেই ১৬ জনকেই উদ্ধার করেছেন আইটিবিপির জওয়ানরা। তাঁরা নিরাপদেই ফিরতে পেরেছেন। তবে মেঘভাঙ্গা প্রলয়ের এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত মোট ১২৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে উত্তরাখন্ড সরকার সূত্রে।
পাঠকের কাছে প্রশ্ন : হিমালয়ের বিভিন্ন নদীগুলিতে যত্রতত্র অপরিকল্পিত বাঁধ দেওয়ার কারণেই কি উত্তরাখণ্ডে বার বার প্রলয় নেমে আসছে ? মতামত দিন।