উত্তরাখণ্ডের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করছে
আজ খবর (বাংলা), নতুন দিল্লী, ভারত, ১০/০২/২০০২১ : উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় ঋষি গঙ্গা নদীর সন্নিহিত অঞ্চলে তুষারধ্বসের ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ সংসদে বিবৃতি দিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় ৭ ফেব্রুয়ারি সকাল দশটা নাগাদ ঋষি গঙ্গা নদীর উপরিভাগে তুষারধ্বসের ফলে ঋষি গঙ্গা এবং অলকানন্দা নদীর জল ফুলে ফেঁপে ওঠে। এর ফলে ঋষি গঙ্গা অঞ্চলে অবস্থিত ১৩.২ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এছাড়াও তপোবন এলাকায় ধৌলি গঙ্গা অঞ্চলে এনটিপিসির নির্মীয়মান ৫২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উত্তরাখণ্ড সরকার জানিয়েছে যে, নদী গুলির নিচু এলাকাতে নতুন করে আর কোন বন্যার আশঙ্কা নেই। রাজ্য সরকার পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে। স্যাটেলাইট মারফত যে ছবি ধরা পড়েছে তাতে দেখা গেছে যে ৫৬০০ মিটার উপর থেকে হিমবাহ ধ্বসে নিচে আছড়ে পড়েছে। ফলে প্রায় ১৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
উত্তরাখণ্ড সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এই বিপর্যয়ে মোট ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৬ জন। এর পাশাপাশি এ পর্যন্ত ১৯৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন। যার মধ্যে ১৩৯ জন শ্রমিক রয়েছে যারা এনটিপিসির নির্মীয়মান প্রকল্পে কাজ করছিলেন। এই তথ্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত পাওয়া গেছে।
এনটিপিসি-র ঋষি গঙ্গা প্রকল্পে সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ১৫ জন শ্রমিককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে, অন্য একটি সুড়ঙ্গে ২৫ থেকে ৩০ জন শ্রমিক এখনো আটকে পড়ে রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাদের জন্য উদ্ধারকার্য চলছে।
রাজ্য সরকার নিহতদের নিকটবর্তী পরিবারের জন্য সাহায্য হিসেবে ৪ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। এই বিপর্যয় একটি সেতু সম্পূর্ণ ভেসে যাওয়ায় ১৩ টি গ্রাম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ওইসব গ্রামগুলিতে চিকিৎসা সরঞ্জাম হেলিকপ্টার এর মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় সরকার পরিস্থিতির ওপর ২৪ ঘন্টা নজর রাখছে। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং পরিস্থিতির ওপর খেয়াল রাখছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এর পক্ষ থেকে ২৪ ঘন্টার জন্য একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বিদ্যুৎ মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ তদারকি করেছেন। আইটিবিপি-র ৪৫০ জন জোওয়ান প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সহ উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৫টি দল সেখানে রয়েছে। এর পাশাপাশি, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৮ টি দল উদ্ধার কাজে হাত লাগিয়েছে। ভারতীয় বায়ুসেনার ৫টি হেলিকপ্টারকে উদ্ধার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। যোশীমঠ একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সশস্ত্র সীমা বল- এর একটি দলকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকার স্নো এন্ড এভালেঞ্চ স্টাডি এস্টাবলিশমেন্ট-এর একটি প্রতিনিধি দলকে পরিস্থিতির নজরদারির সেখানে পাঠিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জাতীয় সংকট পরিচালন কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
Loading...