আজ খবর (বাংলা), বারামুলা, জম্মু ও কাশ্মীর, ১১/০২/২০২১ : ভারতীয় সেনাবাহিনীর বাছাই করা জওয়ানদের কাশ্মীরের গুলমার্গের কাছে উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে কঠোর ট্রেনিং দিতে শুরু করল হাই অল্টিচিউড ওয়ারফেয়ার স্কুল (HAWS)।
সেনাসূত্রে জানা গিয়েছে, উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে যে কোনো পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে, যুদ্ধ করতে, বা উদ্ধারৰকাৰ্য্য চালাতে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতেই হয়। তাই উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে রুক্ষ ও বন্ধুরতম এলাকায় সেনাবাহিনীকে এই ধরনের ট্রেনিং দেওয়া হয়। বরফাবৃত পার্বতগাত্রে কঠিন পরিস্থিতিতে কঠোরভাবে চলছে সেনাবাহিনবীকে ট্রেনিং দেওয়ার কাজ। মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয় এই ধরনের ট্রেনিংকে। প্রথম কোর্সটিতে বেসিক ও এডভান্স দুই ধরনের কোর্স থাকে। উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে রক্তচাপ স্বাভাবিক রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং নানা রকম কাজ কর্ম করতে হয় সৈনিকদের। পাহাড়ে বরফের মোড়া ৮০ ডিগ্রি ঢাল বেয়ে দ্রুত স্কি করার শিক্ষা দেওয়া হয়, যাতে একটি পোস্ট থেকে সেনারা দ্রুত আর একটি পোস্টে গিয়ে পৌঁছাতে পারেন। এই ট্রেনিং-এ ঝুঁকিও খুব বেশি। তবু সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে নিতেই হয় জওয়ানদের।
দ্বিতীয় ট্রেনিংটিতেও বেসিক ও এডভান্স দুই রকম পর্যায় থাকে, এই ট্রেনিং-এ উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে যুদ্ধ করার কৌশল রপ্ত করানো হয়জাওয়ানদেরকে। এই মুহূর্তে ভারতের কাছে বেশ কিছু নতুন নতুন অস্ত্রশস্ত্র ও প্রযুক্তি এসে গিয়েছে। এবার ওই ট্রেনিং-এ সে সব ব্যবহারের কৌশলও রপ্ত করানো হচ্ছে। উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতে জওয়ানদের অন্তত এক সপ্তাহকাল অতিবাহিত করতে হয়, যেখানে তাঁদের নিজেদেরকেই বরফের ওপর ইগলু বানিয়ে বাস করতে হয়, অথবা বরফের মধ্যে সুড়ঙ্গ তৈরি করতে হয় বা বরফের ট্রেঞ্চ তৈরি করে নিতে হয়। তার সাথে সাথেই যুদ্ধ্যাভ্যাসের জন্যে নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হয় প্রতি নিয়ত।
উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে এভেল্যান্স বা তুষার ধ্বস নেমে আসতেই পারে যখন তখন। প্রতি বছর ডিউটি করতে গিয়ে সেনাবাহিনীর বেশ কিছু জওয়ান তুষারধ্বসের কবলে পড়ে শহীদ হন। এবার জওয়ানদের সেই ট্রেনিংও দেওয়া হচ্ছে, যাতে তুষার ধ্বসের কবলে পড়েও তাঁরা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে পারেন এবং নিজেকে উদ্ধার করতে পারেন। এভাবেই অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে তৈরি করা হয় মাউন্টেন আর্মির জওয়ানদের। ট্রেনিং-এর পর এই জওয়ানদের নিজেদের ইউনিটে ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং ট্রেনিং প্রাপ্ত জওয়ানরা ফিরে গিয়ে নিজেদের ইউনিটের জওয়ানদের এই ধরনের ট্রেনিং দেবেন। এভাবেই ধাপে ধাপে শক্তিশালী করে তোলা হচ্ছে ইন্ডিওয়ান আর্মিকে।