আজ খবর (বাংলা), কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ১২/০২/২০২১ : আজ বাম সংগঠনগুলির ডাকে রাজ্য জুড়ে ১২ ঘন্টার বাংলা বন্ধে মিশ্র সাড়া পড়লেও দীর্ঘ লক ডাউনে ঘরে আটকে থাকা মানুষ যেন বোঝাতে চাইছেন ঘরে থাকার পালা শেষ।
দীর্ঘ লক ডাউন এবং আনলকের সময় ধরে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আজই খুলেছে রাজ্যের স্কুলগুলি। তাও নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর জন্যে স্কুল খোলা হয়েছে। নিচু ক্লাসের জন্যে নয়। আজ পড়ুয়ারাও মুখিয়ে ছিল দীর্ঘকাল বন্ধ স্কুলে যাওয়ার জন্যে। তার মধ্যেই গতকাল ১০টি বাম সংগঠনের ডাকে ছাত্র যুবরা নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল। সেই অভিযানকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছিল এবং প্রচুর ছাত্র ছাত্রীরা আহত হয়েছিলেন। পুলিশের লাঠিচার্জের বিরুদ্ধে আজ রাজ্য জুড়ে ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্ধের ডাক দিয়েছিল বাম সংগঠনগুলি।
আজ সকালে উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি শহরে বন্ধের দরুন বেশ কিছু দোকানপাট বন্ধ ছিল। মহাবীরস্থানের দোকানগুলিরও শাটার ছিল নামানো। রাজ্যের অন্যান্য শহরেও ছিল বন্ধের মিশ্র প্রতিক্রিয়া। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বহুদিন পর স্কুলে আসা পড়ুয়াদের বাধা দেওয়া হয়েছে। অনেক জায়গায় পড়ুয়ারা স্কুলে যেতে না পেরে ফিরে গিয়েছে। কাঁচরাপাড়া, ডোমজুড়, মহেশতলা, বালি সহ বিভিন্ন জায়গায় রেল অবরোধ করেছেন বন্ধ সমর্থনকারীরা। আসানসোলেও গাড়ি আটকানোর খবর পাওয়া গিয়েছে। রেল আটকানো হয়েছে যাদবপুরেও। অনেক জায়গায় আবার রাজপথে বাম কর্মীরা ফুটবল ক্যারাম খেলতে নেমে পড়েছেন। কয়েকটি জায়গায় পুলিশ আটকাতে গেলে বন্ধ সমর্থকেরা পুলিশকর্মীদের হাতে তুলে দেন চকোলেট ও ফুল।
কলকাতায় আজ কিন্তু সেভাবে প্রভাব পড়েনি বন্ধের। মানুষ স্বাভাবিকভাবেই রাস্তায় নেমেছেন। আজ কলকাতায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা রয়েছে। রয়েছে কম্ব্যাট ফোর্সও; কোথাও যাতে জোর করে দোকান বন্ধ না করা হয় তার জন্যে পুলিশি ব্যবস্থা রয়েছে। তবু আজ কলেজ স্ট্রিট অঞ্চলে জোর করে দোকান বন্ধ করা হয়েছে বলে জানতে পারা গিয়েছে। আজ বাম নেতারা মিছিল করেছেন মধ্যে কলকাতায়। সেই মিছিলে ছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র এবং মহম্মদ সেলিমের মত বাম নেতারা।
গতকালই নবান্ন থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল রাজ্যের সব সরকারি অফিস আজ খোলা থাকবে। সেই মত রাজ্যের সব সরকারি অফিসেই কাজকর্ম চলছে আর পাঁচটা দিনের মতই। রাজ্যের প্রায় সর্বত্র যান চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে। এখন বামেদের এই হঠাৎ ডাকা বন্ধ রাজনৈতিকভাবে নির্বাচনের ইভিএম মেশিনে কতটা প্রভাব ফেলে সেটাই সেটাই দেখার। তবু কর্মনাশা বন্ধ আর চাইছেন না রাজ্যবাসী। প্রশ্ন উঠছে, প্রতিবাদের এই পুরোনো রাজনৈতিক হাতিয়ার কি এবার বাতিলের খাতায় ? (দেখুন ভিডিও)