![]() |
বাগডোগরার দুর্ঘটনাস্থল |
আজ খবর (বাংলা), ধূপগুড়ি ও বাগডোগরা, পশ্চিমবঙ্গ, ২০/০১/২০২১ : উত্তরবঙ্গে পরপর দুর্ঘটনা। গতকাল রাতে ধূপগুড়ি আর আজ ভোরে শিলিগুড়ির কাছে বাগডোগরায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বেশ কিছু মানুষের। সমবেদনা জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ধূপগুড়িতে মর্মান্তিক দূর্ঘটনায় মৃত্যু হলো ১৪ জনের । যার মধ্যে রয়েছে ৪টি শিশু ও ৭ মহিলা। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাত নয়টা নাগাদ জলঢাকার লালস্কুল সংলগ্ন এলাকায়।জানা গেছে একটি পাথর বোঝাই ডাম্পার আলিপুরদুয়ার থেকে ময়নাগুড়ির দিকে সঠিক পথেই যাচ্ছিল। সেই সময় উল্টো দিক থেকে একটি টাটা ম্যাজিক, একটি মারুতি ও একটি কার ভুল পথে আসছিল। রাত প্রায় ন'টা নাগাদ জলঢাকার লালস্কুল সংলগ্ন এলাকায় ডাম্পারটির সঙ্গে উল্টো দিক থেকে আসা প্রথম গাড়িটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। যারফলে ডাম্পারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে উঠে যায় এবং ডাম্পারে থাকা পাথরের ভারে বেসামাল হয়ে ডাম্পারটি উল্টে যায়। ফলে ডাম্পারে থাকা পাথর ছোট গাড়ি দুটির ওপরে পড়ে যায়। বিকট আওয়াজ পেয়ে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এসে পাথর সড়িয়ে উদ্বারকার্যে হাত লাগায়।
খবর পাওয়া মাত্রই ধূপগুড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। ধূপগুড়ি দমকল বাহিনীর কর্মীরা ক্রেন ও জেসিবি দিয়ে উদ্ধারকার্য চলতে থাকে। কয়েক ঘন্টার চেষ্টায় পাথরে চাপা পড়ে যাওয়া ছোট গাড়িগুলো থেকে একে একে ২৪ জনকে বের করে আনা হয়। এরমধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। মৃতদের মধ্যে ৪ জন শিশু, ৭ জন মহিলা ও ৩ জন পুরুষ বলে জানা গেছে। তবে গভীর রাত পর্যন্ত মৃতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। পুলিশ মৃতদের পরিচয় খোঁজার চেষ্টা করছে। আহতদের জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যেও বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
এর মধ্যেই স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনটি ছোট গাড়িতে থাকা প্রত্যেকেই জলঢাকার ময়নাতলি এলাকায় বৌভাত খেতে এসেছিলেন এবং তারা ময়নাগুড়ির চূড়াভান্ডার এলাকার বাসিন্দা। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ময়নাগুড়িতে।
এদিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকার্যে তদারকি করেন ধূপগুড়ির বিধায়ক মিতালি রায়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্ৰামীণ), ডিএসপি ক্রাইম, ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ সহ বিরাট পুলিশ বাহিনী।
![]() |
ধূপগুড়ির ঘটনাস্থলে তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ |
পাথরের নীচে চাপা পড়ে যাওয়ার ফলে দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে ছোট তিনটি গাড়িই। রীতিমতো চ্যাপ্টা হয়ে গেছে মারুতি গাড়িটি। বুধবার সকালেও দূর্ঘটনাস্থলে ভিড় জমান স্থানীয় বাসিন্দারা। কুয়াশা এবং ভুল পথে চলার জন্যই এই দূর্ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে আসেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় মৃতদের পরিবারগুলিকে সমবেদনা জানিয়েছেন। মৃতদের পরিবারগুলিকে সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। মৃতদের পরিবার পিছু প্রধানমন্ত্র্রী ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন। আহতরা পাবেন ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ।
এদিকে আজ ভোরে শিলিগুড়ির কাছে বাগডোগরা থেকেও দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে। আজ ভোর রাতে বাগডোগরার কাছে গোঁসাইপুর এলাকায় দুটি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে একটি গাড়ি উল্টে যায়; অন্য্ গাড়িটিও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মূলত রাস্তার ঘন কুয়াশার কারণেই এই দুর্ঘটনাগুলি ঘটছে বলে মনে করা হচ্ছে।