আজ খবর ( বাংলা), চন্দননগর, পশ্চিমবঙ্গ, ২০/০১/২০২১ : প্রথমে মানকুণ্ডুর রাস্তায় বিশাল রোড শো, এবং তারপরে জনসাভায় ভাষণ দিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
আজ হুগলি জেলার চন্দননগরের কাছে সার্কাস মাঠে জনসভা করে বিজেপি। তার আগে একটি রোড শো-এর আয়োজন করা হয়েছিল, যে রোড শো-এ অংশগ্রহণ করেছিলেন সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি, স্বপন দাশগুপ্ত এবং শুভেন্দু অধিকারী। এই রোড শো-এ কার্যত জনপ্লাবন দেখতে পাওয়া গেল. কাতারে কাতারে মানুষের ভীড় উপচে পড়েছিল মানকুণ্ডুর রাস্তায়। তালডাঙ্গা মোড় থেকে রোড শো মানকুণ্ডু হয়ে সার্কাস মাঠে শেষ হয়।
আজকের জনসভায় মধ্যমনি ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি আজ বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, "আজ গোটা চন্দন নগর রাস্তায় নেমে এসেছে। রাস্তার দুপাশে বাড়িগুলোতেও ৮ থেকে ৮০ যে ভীড় দেখলাম আমি, তাতেই বুঝেছি এই জেলার সব সমর্থন রয়েছে বিজেপির দিকে। এখানকার ছিন্নমূলের বিধায়ক যখন যে ক্ষমতায় তখন সেই দিকে থাকেন। আর গায়ক গায়িকাদের থেকে কাটমানি নেন। আমি ২১ বছর ধরে যে দলটা করেছি, সেই দলটা এখন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী হয়ে গেছে, যার চেয়ারম্যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টরের নাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আপনারা লোকসভা ভোটে তাদের এমন গুঁতিয়ে দিয়েছেন যে, গুঁতো না খেলে বেড়াল গাছে ওঠে না অবস্থা।"
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "সেদিন নন্দীগ্রামে মাননীয়া যা কিছু বলেছেন সব মিথ্যা। তিনি কেন্দ্রের সব প্রকল্পের নাম বদলে এখানে চালিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নাম বদলে করে দিয়েছিলেন বাংলা আবাস যোজনা। আমি কাল বলেছি, আপনাকে নন্দীগ্রামেই দাঁড়াতে হবে, দুই জায়গায় দাঁড়াতে দেব না। নন্দীগ্রামে আপনি দাঁড়ান। বিজেপির হয়ে যেই দাঁড়ান না কেন আপনাকে ৫০ হাজার ভোটে হারাবোই। নন্দীগ্রামে আমি বুঝে নেব, আপনারা চন্দননগর বুঝে নিন।এখানে 'জয় শ্রীরাম' স্লোগান চলবে কিনা, সেটা ঠিক হবে গণনার পর।"
শুভেন্দু জনসভা থেকে বলেন, "তৃণমূলের সবাই এখন বেসুরো গাইছেন। আমি সবাইকে বলছি, যদি কর্মচারী হয়ে থাকতে চান, তাহলে তৃণমূলেই থাকুন, আর যদি কাজ করতে চান তাহলে বিজেপিতে যোগ দিতেই হবে। নির্বাচন কমিশনের আচরণ বিধি চালু হতে দিন, তারপর দেখবেন তৃণমূল কেমন পরপর ধাক্কা খায়। ছক্কা হাঁকিয়ে হুগলিতে ১৮-০ করতে হবে। উত্তর বঙ্গ ফাঁকা, ব্যারাকপুরে অর্জুন সিং একাই কাফি, লকেট হুগলি দেখছে, নদীয়াতে কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে, গঙ্গার পশ্চিম দিকে বালু মাটির শুভেন্দু আর লাল মাটির দিলীপ সব ফাঁকা করে দেব। তৃণমূলকে সরাতে না পারলে বাংলার সর্বনাশ। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী দেশের প্রধানমন্ত্রীকে তুই তোকারি করেন, বাঙালি হিসেবে সেটা কি আপনারা মেনে নিতে পারেন ? এটাই কি বাংলার সংস্কৃতি ? নেতাজি, বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ এঁরা ছিলেন বাংলার গর্ব, আর নতুন করে বাংলাকে কেউ গর্বিত করছেন না কেন ? কেন নতুন করে বাংলার গর্ব তৈরি হচ্ছে না ? আমি চাই মাননীয়া আপনি নন্দীগ্রাম থেকেই দাঁড়ান, আমার ষোলো কলা পূর্ণ হবে।"
এদিকে আজ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে আগামী ৫ই ফেব্রুয়ারি থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সভাপতি জগৎ প্রসাদ নাড্ডার নেতৃত্বে শুরু হতে চলেছে 'পরিবর্তন যাত্রা'। এই যাত্রা শুরু করা হবে উত্তরবঙ্গ থেকে। অন্যদিকে আজ দিল্লীতে গিয়ে বিজেপি সদর দপ্তরে পৌঁছে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করলেন শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য্য। এছাড়াও আজ কলকাতার হেস্টিংস অফিসে সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন বালি বিধানসভা থেকে ৫১ জন, কলকাতার রাসবিহারী কেন্দ্র থেকে ১১ জন, নাকাশিপাড়া কেন্দ্র থেকে তৃণমূল ছেড়ে ২০১ জন। এছাড়াও ডক্টর দেবাশীষ মোদক ও আদিত্য বিড়লা গ্রূপের সিনিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট রঞ্জন ব্যানার্জি বিজেপিতে যোগ দিলেন।