আজ খবর (বাংলা), কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ১৬/১২/২০২০ : নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) রাসায়নিক, জৈব, রেডিওলজিক্যাল এবং পারমাণবিক বিপর্যয়ের জরুরী ব্যবস্থাপনার তিনদিনের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেছে। এটি চলবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
আজ কলকাতা বিমানবন্দরে এনডিএমএ-র সদস্য সচিব শ্রী জি ভি ভি শর্মা, কেন্দ্রীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা ও নাগরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান সচিব শ্রী দুশ্যন্ত নারিয়ালা, কলকাতা বিমানবন্দরের ডায়রেক্টর শ্রী কৌশিক ভট্টাচার্য এবং এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার পূর্বাঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী পরিচালক শ্রী মনোজ গাঙ্গলের উপস্থিতিতে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।বিমানবন্দরে রাসায়নিক, জৈব, রেডিওলজিক্যাল এবং পারমাণবিক উপকরণ ব্যবহারের ফলে সম্ভাব্য বিপর্যয় প্রতিরোধে বিমানবন্দরের বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মীদের প্রস্তুতি বৃদ্ধির জন্য এই প্রাথমিক প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। এই কর্মসূচিতে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ, ব্যক্তিগত নিরাপত্তামূলক সরঞ্জাম ব্যবহার সহ বিপর্যয় সনাক্তকরণ এবং পরিশোধনের প্রত্যক্ষ প্রদর্শনও অভ্যাস করা হবে।
তাছাড়া, মোট ৩৫ জন কর্মীকে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং প্রাথমিক মন-সামাজিক সহায়তার প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। স্বাগত বক্তব্যে শ্রী ভট্টাচার্য সাম্প্রতিক আম্ফান ঘূর্নিঝড়ে বিমানবন্দরের বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার উদাহরণ দিয়ে এই প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরেন। শ্রী গাঙ্গল তাঁর বক্তব্যে বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বিস্ফোরণের মতো বিপর্যয়ের পর ত্রাণ ও পুনরুদ্ধারের উদাহরণ দেন। তিনি এ ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে যে বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলির মোকাবিলায় কী ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে তাও তিনি উল্লেখ করেন। শ্রী দুশ্যন্ত নারিয়ালা বলেন, নিরাপত্তার সমস্যার কারণে বিমানবন্দরে বিপর্যয় মোকাবিলা আরও জটিলতর হয়ে ওঠে। যে কোনও বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুতির ওপরই বেশি জোর দিতে হবে। ভূমিকম্প এবং ঘূর্নিঝড়ের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এই বিপর্যয়গুলি হঠাৎ আসে কিন্তু এগুলির প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হয়। সেজন্য এ ধরনের বিপর্যয় ব্যবস্থাপনায় অগ্রিম প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শ্রী শর্মা তাঁর মূল বক্তব্যে ফুকুশিমায় ঘটে যাওয়া তিনটি বিপর্যয়ের উদাহরণ দিয়ে বলেন, সেখানে নিউক্লিয়ার লিকেজের পর জাপান অনেক দেশের বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সাহায্য চেয়েছিল। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ভারতের এনডিআরএফ দলের বিপর্যয় মোকাবিলায় সাফল্য সারা পৃথিবীতে প্রশংসিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি কোভিড-১৯-এর মতো বিপর্যয়ের মোকাবিলার
ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ছিল মানুষের জীবন বাঁচানো ও আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস। বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার জন্য প্রস্তুতি বক্তৃতা, মক ড্রিল ইত্যাদির মাধ্যমে আরও স্থিতিস্থাপকতা অর্জন করতে হবে। বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা প্রস্তুতি একজনের দায়িত্ব নয়, সকলকেই সমানভাবে দায়বদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সিবিআরএন বিপর্যয় মোকাবিলা ও ব্যবস্থাপনা বোঝার জন্য একটি ভালো সুযোগ।
এনডিএমএ-র সদস্য শ্রী ডি সুন্দর প্রশিক্ষণ কর্মসূচি প্রসঙ্গে বলেন এবং ওই সংস্থার সিনিয়র কনসালট্যান্ট শ্রী এস কে মিশ্র প্রশিক্ষণ সম্পর্কে প্রাথমিক বক্তব্য রাখেন। কলকাতা বিমানবন্দরের জি এম অপারেশনস শ্রী এইচ পুল্লা ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।