আজ খবর (বাংলা), কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ০২/১২/২০২০ : এই মুহূর্তে বঙ্গ রাজনীতিতে বড় খবর হল তৃণমূল দলে আর সম্ভত থাকছেন না শুভেন্দু অধিকারী। গত কয়েকদিন ধরেই বাংলার রাজনীতি তোলপাড় হচ্ছিল শুভেন্দু অধিকারীর তৃণমূল কংগ্রেসে থাকা বা না থাকা নিয়ে।
বেশ কিছুদিন ধরেই জানা যাচ্ছিল রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সাথে তৃণমূল কংগ্রেসের বিভেদ বেড়েছে অনেকটাই। তিনি হয়ত দল ছাড়তে চলেছেন। শুভেন্দু কি বিজেপি বা অন্য কোনো দলে যোগ দিতে চলেছেন ? না কি তিনি নিজেই কোনো নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি করার কথা ভাবছেন ? এই নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে জোরদার জল্পনা শুরু হযে গিয়েছিল। তবে এই বিষয়ে প্রকাশ্যে শুভেন্দুবাবুকে সেভাবে মুখ খুলতে দেখা যায় নি।
গতকাল তৃণমূল নেতা সৌগত রায় জানিয়েছিলেন, "শুভেন্দুবাবুর সাথে তাঁর কথাবার্তা হয়েছে, এবং শুভেন্দুবাবু তৃণমূলেই থাকছেন।" জানা গিয়েছে, গতকাল উত্তর কলকাতার একটি বাড়িতে সৌগতবাবুর সাথে শুভেন্দু অধিকারীর একটি গোপন বৈঠক হয়েছিল। সৌগতবাবুই জানিয়েছিলেন, সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের নির্বাচন পরামর্শদাতা প্রশান্ত শোর। ওই বৈঠক চলার সময় নাকি শুভেন্দু অধিকারীর সাথে টেলিফোনে কথা হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের । বৈঠকে স্থির হয়েছিল শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলে থেকেই কাজ করবেন।
এই কথা আজ সকালে সৌগতবাবুই জানিয়েছিলেন সাংবাদিকদেরকে। কিন্তু বেলা যত গড়ালো, ততই মেঘ কেটে আকাশ পরিস্কার হতে থাকল। জানা গেল, শুভেন্দু অধিকারী একটি এসএমএস বা What's App করে সৌগতবাবুকে জানিয়েছেন, "আমার বক্তব্যের এখনো কোনো সমাধান করা হয় নি। সমাধান না করেই আমার ওপর সব কিছু চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ৬ই ডিসেম্বর আমার সাংবাদিক সম্মেলন করার কথা ছিল। সেখানেই সবকিছু জানানোর কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই আপনারা সব কিছু প্রেসকে জানিয়ে দিলেন। ফলে একসাথে কাজ করা মুশকিল। আমাকে মাফ করবেন। " এই মেসেজ পাওয়ার কথা সৌগতবাবুও স্বীকার করে নেন।
ফলে তৃণমূল কংগ্রেস এখন শুভেন্দু অধিকারীর কাছে অতীত। তিনি এর আগেই তিনটি দপ্তরের মন্ত্রীপদ ছেড়ে দিয়েছেন, এছাড়াও হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ ও হুগলি রিভার ব্রীজ উন্নয়ন পর্ষদের দায়িত্বও ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁর দলের সাথে এই বিভেদ নিয়ে ইতিমধ্যেই অবমাননাকর মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে , অখিল গিরি ও অন্যান্য নেতা নেত্রীদেরকে। এখন যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, তাতে তৃণমূল দল ছাড়া তাঁর কাছে শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। শুভেন্দু অধিকারী এই নিয়ে সাংবাদিকদেরকে কোনোরকম বিবৃতি দেন নি। এখন তিনি দল ছেড়ে চলে যান কিনা, অথবা অন্য কোনো দলে যোগ দেন কিনা, সেটাই দেখার।