আজ খবর (বাংলা), শান্তিনিকেতন, বীরভূম, পশ্চিমবঙ্গ, ২৪/১২/২০২০ : "হে বিধাতা মোদের গৌরব দাও" রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই রচনা দিয়েই আজ বিশ্বভারতীর ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভার্চুয়াল সমাবর্তনে বক্তব্য রাখতে শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরও।
বিশ্বভারতী সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী বলেন, "হে বিধাতা মোদের গৌরব দাও, বিশ্বভারতীর ১০০ বছরে এই কামনাই করছি। বিশ্বভারতীর ১০০ বছর পূর্তি প্রত্যেক ভারতবাসীর কাছে গৌরবের। ভারতবর্ষের জন্যে গুরুদেব যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা বাস্তবায়িত করার জন্যে এই বিশ্বভারতী এক মহাতীর্থসম। আদর্শ মানুষ তৈরি করার কাজ করেছিলেন গুরুদেব। গ্রাম উন্নয়নে বিশ্বভারতীর ভূমিকা গুরুত্ত্বপূর্ন।"
মোদী বলেন, "নব ভারত নির্মাণে বিশ্বভারতীর ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। প্রকৃতির সঙ্গে মাইল অধ্যয়ন বিশ্বভারতীর বৈশিষ্ট ছিল। বিশ্বভারতী নামের মধ্যেই ভারত মাতার নাম রয়েছে। বিশ্বভারতী স্থাপনের ২৭ বছর পর দেশ স্বাধীন হয়েছিল, তাঁর বাণীকে পাথেয় করেই শক্তিশালী নতুন ভারত গড়ার লক্ষে এগিয়ে যাব। শিক্ষার মন্দির হিসেবে এই বিশ্বভারতী গড়ে তুলেছিলেন গুরুদেব। উনি বলেছিলেন 'আমার মনে নেই আমাকে কি পড়ানো হয়েছিল, আমার শুধু সেটাই মনে আছে যেটা আমি শিখেছিলাম'। এটাই সকলের আদর্শ হওয়া উচিত। শুধুই পড়াশুনা নয়, শিখতে হবে। যে যত শিখবে, নিজেকে তত সমৃদ্ধ করতে পারবে।"
নরেন্দ্র মোদী বলেন, "বিশ্বভারতীর অবদান ছিল দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে। গুরুদেব নিজে শক্তিশালী আত্মনির্ভরশীল দেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালিরা অনেক অনেক আত্মবলীদান দিয়েছেন। ক্ষুদিরাম, প্রফুল চাকি থেকে শুরু করে মাতঙ্গিনী হাজরা, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, এঁরা দেশের জন্যে হাসতে হাসতে ফাঁসির দড়িকে চুম্বন করেছেন, মৃত্যুবরণ করেছেন। এমন অনেকেই হয়ত আছেন যাঁদের নাম আমরা হয়ত জানতেই পারিনি।"
এরপর বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীদের একটি নতুন ভাবনার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, "বিশ্বভারতী আমাদের আত্মনির্ভর হওয়ার শিক্ষা দিয়েছে। পৌষ মেলার সাথেও জুড়ে আছে ভোকাল ফর লোকাল। এই বছর করোনা আবহে সেভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না পৌষ মেলা। পৌষ মেলায় প্রত্যেক বছর যে শিল্পীরা আসতেন, এবারে তাঁরা আর আসতে পারবেন না। তাই আমি অনুরোধ করব বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীরা এই সব শিল্পীদের সাথে যোগাযোগ করুন এবং তাঁদের শিল্পকর্ম অনলাইনে বিক্রি করার সুযোগ করে দিন। আপনারা চেষ্টা করুন যাতে ওই শিল্পীদের পণ্য গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ওঁদের আত্মনির্ভর করে তুলুন। যদি সবাই এগিয়ে আসেন তাহলে ভালহয়, আর যদি এগিয়ে না আসেন তাহলে গুরুদেব তো বলেছেন, একলা চলো রে।"