আজ খবর (বাংলা), কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ২৭/১১/২০২০ : মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রত্যাশিতভাবেই এবার মন্ত্রীত্ব ছাড়লেন শুভেন্দু অধিকারী। পরিবহন মন্ত্রীত্বের পদ থেকে ইস্তফা চিঠি তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ফিরহাদ হাকিমের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের কাছেও।
বেশ কিছুদিন ধরেই বোঝা যাচ্ছিল দল ছাড়তে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অনুগামীরা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শুধুমাত্র শুভেন্দুবাবুর ছবি দিয়ে হোর্ডিং ও ব্যানার লাগাচ্ছিলেন।সোশ্যাল মিডিয়াতেও শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা সোচ্চার হচ্ছিলেন ব্যাপকভাবে। তাঁদের স্লোগান ছিল " আমরা দাদার অনুগামী"। এই রাজ্যের রাজনীতিতে 'দিদি' বলে একটিই পদ ছিল। শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরাই রাজ্য রাজনীতিতে 'দিদি'র বিপরীতে 'দাদা' পদের আমদানি করেছেন। তখন থেকেই বোঝা যাচ্ছিল, বঙ্গ রাজনীতিতে দিদির বিপরীতে দাদা আছেন।
বেশ কিছুদিন ধরেই রাজ্য রাজনীতিতে জল ঘোলা হচ্ছিল, শুভেন্দুবাবু হয়ত তৃণমূল দল ছেড়ে দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে তিনি দল ছেড়ে অন্য কোনো দলে যোগ দেবেন নাকি নিজের কোনো নতুন দল তৈরি করবেন, এই নিয়ে জল্পনা ছিল তুঙ্গে। প্রথমে হুগলি নদী উন্নয়ন পর্ষদ এবং আজ হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার আগে অবশ্য তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রীসভা থেকেও ইস্তফা দিয়ে দেন। তিনি ছিলেন রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী। সেই মন্ত্রীত্ব থেকেও শুভেন্দুবাবু ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন। এখন তাঁর তৃণমূল দল ছাড়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে।
তিনি যাতে এভাবে দল ছেড়ে চলে না যান,. তার জন্যে তৃণমূলের তরফ থেকে রফাসূত্র খুঁজতে শুভেন্দু অধিকারীর সাথে কথা বলতে গিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর, তাঁর সাথে দফায় দফায় কথা বলে বোঝাবার চেষ্টা করেছেন তৃণমূল নেতা সৌগত রায়। কিন্তু বরফ গলেনি, তার প্রমাণ আজ মন্ত্রীসভা থেকে শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগ। সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে শুভেন্দুবাবুর সাথে ফোনে কথা বলেছিলেন, কিন্তু সামান্য সময়ের জন্যে তাঁদের ফোনে কথা হয়, মমতা জানতে চেয়েছিলেন,কেন তিনি মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করতে চেয়েছেন। ফোনেই হয়ত মমতা উত্তর পেয়ে গিয়েছেন।
যে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের ওপর ভর করে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই নন্দীগ্রাম আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে তৃণমূলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা যিনি পেয়েছেন, তিনি হলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাই তিনি যদি তৃণমূল দল ত্যাগ করে চলে যান, সেটা আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের কাছে যথেষ্ট ক্ষতিকর বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল, আজই হয়ত সাংবাদিক সম্মেলন করতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী।