আজ খবর (বাংলা), নতুন দিল্লী, ভারত, ১৭/১১/২০২০ : 'আত্মনির্ভর ভারত' হোক অথবা 'ভোকাল ফর লোকাল', দেশের পণ্য হিসেবে রেকর্ড বিক্রি করে খাদি গ্রামোদ্যোগ নয়া নজির গড়ল। দিল্লির কনটপ্লেস ফ্ল্যাগশিপ বিক্রয় কেন্দ্রে ৪০ দিনে ৪ বার ১ কোটি টাকারও বেশি খাদি সামগ্রী বিক্রি হয়েছে।
আর্থিক শ্লথগতি ছাপিয়ে গিয়ে এবং আসেপাশে করোনা মহামারীর ভীতি দূরে সরিয়ে চলতি উৎসব মরশুমে খাদি শিল্পীদের আরও একবার অধিক মুনাফার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। অক্টোবরের ২ তারিখ থেকে ৪০ দিনে ৪ বার খাদি সামগ্রীর দৈনিক কেনাকাটার পরিমাণ রেকর্ড ১ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। নতুন দিল্লির কনটপ্লেসে খাদি ইন্ডিয়ার যে ফ্ল্যাগশিপ খুচরো বিক্রয় কেন্দ্রটি রয়েছে, তাতে এই রেকর্ড বিক্রি হয়েছে।
কনটপ্লেসের এই খাদি ইন্ডিয়া বিক্রয় কেন্দ্রে গত ১৩ তারিখ বিক্রির পরিমাণ ছিল ১ কোটি ১১ লক্ষ টাকা, যা চলতি বছরে এ যাবৎ ১ দিনে সর্বোচ্চ। লকডাউনের পর বিভিন্ন কর্মকান্ড শুরু হওয়ার প্রেক্ষিতে খাদি সামগ্রীর কেনাকাটা গত দোসরা অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তীর দিন রেকর্ড ১ কোটি ২ লক্ষ টাকার সীমা ছাড়ায়। এছাড়াও, গত ২৪শে অক্টোবর লেনদেনের পরিমাণ ১ কোটি ৫ লক্ষ টাকায় পৌঁছয়। চলতি মাসের ৭ তারিখ খাদি সামগ্রীর বিক্রয় ১ কোটি ৬ লক্ষ টাকা স্পর্শ করে।
এর আগে ২০১৮-তেও চারবার দৈনিক খাদি সামগ্রীর বিক্রির পরিমাণ ১ কোটি টাকার সীমা ছাড়ায়। সে বছর ১৩ই অক্টোবর একদিনে বিক্রি হয়েছিল ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার সামগ্রী। কিন্তু ২০১৯ – এর দোসরা অক্টোবর এ যাবৎ সব রেকর্ড ছাপিয়ে একদিনেই সর্বাধিক ১ কোটি ২৭ লক্ষ টাকার খাদি সামগ্রী বিক্রয় হয়। উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১৬’র আগে খাদি সামগ্রীর দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ কখনও ১ কোটি টাকার সীমা ছাড়ায়নি। ২০১৬’র ২২শে অক্টোবর একদিনেই কনটপ্লেসের এই খাদি বিক্রয় কেন্দ্রে রেকর্ড ১ কোটি ১৬ লক্ষ ১৩ হাজার টাকার সামগ্রী বিক্রয় হয়েছে।
খাদি সামগ্রীর কেনাকাটায় এই অভাবনীয় সাফল্য প্রসঙ্গে খাদি ও গ্রামোদ্যোগ কমিশনের চেয়ারম্যান শ্রী বিনয় কুমা সাক্সেনা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী স্বদেশী সামগ্রী, বিশেষ করে খাদিজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে বারবার যে আবেদন করেছেন, এই অভাবনীয় মুনাফা তারই প্রতিফলন। ‘এটা অত্যন্ত আনন্দদায়ক যে, বিপুল সংখ্যক খাদি অনুরাগী খাদি সামগ্রী কেনাকাটা করে পক্ষান্তরে খাদি শিল্পীদেরই রুজি-রোজগারে সাহায্য করছেন। আর প্রকৃতপক্ষে এই শিল্পীরাই খাদি ও গ্রামোদ্যোগ শিল্পের মেরুদন্ড। মহামারী সত্ত্বেও খাদি শিল্পীরা তাঁদের কাজকর্ম ও সামগ্রী উৎপাদন পুরোদমে চালিয়ে গেছেন। এমনকি, সহ-নাগরিকবৃন্দ দেশবাসীরা এই একই অদম্য জেদ নিয়ে শিল্পীদের উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করেছেন’ বলে শ্রী সাক্সেনা অভিমত প্রকাশ করেন। খাদি ও গ্রামোদ্যোগ কমিশন খাদি ক্ষেত্রের অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে আর্থিক মন্থরতার সময়ও প্রয়োজনীয় সবরকম উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে শ্রী সাক্সেনা জানান।
খাদি সামগ্রীর একদিনেই রেকর্ড বিক্রয়ের পরিমাণ নিম্নরূপ –
• ৪ঠা অক্টোবর, ২০১৪ – ৬৬ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা
• দোসরা অক্টোবর, ২০১৫ – ৯১ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা
• ২২শে অক্টোবর, ২০১৬ – ১ কোটি ১৬ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা
• ১৭ই অক্টোবর, ২০১৭ – ১ কোটি ১৭ লক্ষ ৮ হাজার টাকা
• দোসরা অক্টোবর, ২০১৮ – ১ কোটি ৫ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা
• ১৩ই অক্টোবর, ২০১৮ – ১ কোটি ২৫ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা
• ১৭ই অক্টোবর, ২০১৮ – ১ কোটি ২ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা
• ২০শে অক্টোবর, ২০১৮ – ১ কোটি ২ লক্ষ ১৪ হাজার টাকা
• দোসরা অক্টোবর, ২০১৯ – ১ কোটি ২৭ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা
• দোসরা অক্টোবর, ২০২০ – ১ কোটি ২ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা
• ২৪শে অক্টোবর, ২০২০ – ১ কোটি ৫ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা
• ৭ই নভেম্বর, ২০২০ – ১ কোটি ৬ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা
• ১৩ই নভেম্বর, ২০২০ – ১ কোটি ১১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা
Loading...