আজ খবর (বাংলা), আলিপুর দুয়ার, পশ্চিমবঙ্গ, ১২/১১/২০২০ : উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে আজ ফের একবার আক্রান্ত হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি বিধায়ক উইলসন চম্প্রমারি, তাঁর গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। রীতিমত ইঁটবৃষ্টি করা হয় দিলীপবাবুদের গাড়িগুলির ওপর।
দিলীপ ঘোষ বিজেপির রাজ্য সভাপতি, নিঃসন্দেহে রাজ্য রাজনীতির একটি গুরুত্ত্বপূর্ন মুখ। বার বার তাঁকে আক্রমন করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গে এর আগেও তাঁকে আক্রান্ত হতে হয়েছিল। রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্রই তাঁর ওপর আক্রমন চালানো হচ্ছে। দার্জিলিং পাহাড়, মেদিনীপুরের কাঁথি, খেজুরি, কোচবিহার বা নিউ টাউন বিভিন্ন জায়গায় দিলীপবাবুকে আক্রান্ত হতে হয়েছে।
আজ সকালে দিলীপবাবু মাদারিহাটে প্রাতঃভ্রমণ করেছেন। এরপর কালচিনিতে জনসভায় যোগ দিয়েছিলেন। তারপর আলিপুরদুয়ার থেকে ভুটান সীমান্ত ঘেঁসা জয়গাঁ যাওয়ার সময় তাঁর গাড়ির কনভয়ে হামলা চালানো হয়। তাঁদের গাড়িতে প্রচুর পরিমাণে ইঁট ছোঁড়া হয় বলে জানতে পারা গিয়েছে। দিলীপ বাবুর সঙ্গে থাকা বিজেপির আর এক বিধায়কের গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেওয়াও হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটছে ? দিলীপবাবুকেই বা কেন বার বার টার্গেট করা হচ্ছে ? তাঁকে কি প্রাণে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছে কেউ ? এই প্রশ্নগুলোই বারে বারে ঘুরে ফিরে আসছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে। এই মুহূর্তে রাজ্যের রাজনীতি উত্তাল অবস্থায় রয়েছে। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যের শাসক দলের ঘাড়ে নি:শ্বাস ফেলছে বিজেপি। গত লোকসভা নির্বাচনে ১৮টা আসন দখল করে গোটা রাজ্যে ইতিমধ্যেই প্রত্যাশা জাগাতে শুরু করেছে বিজেপি। সেই প্রত্যাশার পারদ চড়তে চড়তে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।
গত বেশ কয়েক মাসে একের পর এক বিজেপি নেতা কর্মীকে (প্রায় ১২০) খুন হতে হয়েছে এই রাজ্যে। বিজেপির এক বিধায়কও খুন হয়েছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই বিজেপি নেতৃত্ব এই খুনের ঘটনাগুলিকে নিয়ে সরব হয়েছেন, আর তাতে উত্তেজনার পারদ আরও কিছুটা চড়েছে। কিন্তু তাই বলে বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে যেভাবে টার্গেট করা হচ্ছে এবং বার বার আক্রমন করা হচ্ছে, তাতে ভোটের ময়দানে বিজেপির পালেই সহানুভূতির হাওয়া লাগবে বলে মনে করছেন রাজনীতি নিয়ে ওয়াকিবহাল মহল।
আজকের ঘটনায় বিজেপির তরফ থেকে প্রথমে অভিযোগ করা হয়েছিল যে দিলীপবাবুকে আক্রমন করার পিছনে তৃণমূলের হাত রয়েছে। পরে বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, যখন দিলীপবাবুর গাড়ির কনভয় জয়গাঁর দিকে যাচ্ছিল, তখন তাঁদেরকে কালো পতাকা দেখানো হয়েছিল রাস্তার ধার থেকে। তাঁদেরকে সুপরিকল্পিতভাবে আক্রমন করা হয়েছে এবং গোটা ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ আগে থেকেই জানতো। বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই আক্রমনের ঘটনার পিছনে রয়েছে বিমল গুরুঙ্গের চক্রান্ত। আজ কলকাতায় বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁ অভিযোগ তুলে বলেন "ভীড়ের মধ্যে থেকে কেউ যে গাড়িতে ইঁট ছুঁড়ে মারবে, সেটা নিশ্চয়ই পুলিশ আগে থেকে জানতো" !
এই ঘটনার পরে রাজ্যজুড়ে প্রতীকী প্রতিবাদ জানাতে বিজেপি কর্মীরা রাস্তায় নেমে বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তবে তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম এই ঘটনা সম্ভন্ধে বলেন, "যদি কেউ এই কাজ করে থাকে, তাহলে খুব অন্যায় করেছে। এই ব্যাপারে দলের কোনো সমর্থন নেই। তৃণমূল হিংসার রাজনীতি করে না। আইন আইনের পথেই চলবে।"