আজ খবর (বাংলা), ইসলামাবাদ, পাকিস্তান, ১২/১১/২০২০ : সাংবাদিকদের জন্যে পাকিস্তান বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক দেশ হিসেবে স্থান পেয়েছে, আজ ফ্রিডম নেটওয়ার্কের রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে।
ফ্রিডম নেটওয়ার্ক তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, ২০০০ সাল থেকে আজ পর্যন্ত পাকিস্তানে মোট ১৪০ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। গোটা বিশ্বের কাছেই গন মাধ্যম অপরিহার্য বলে বিবেচিত হয়। কিন্তু পাকিস্তানের আইন গন মাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্যে অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রিন্ট মিডিয়ায় কাজ করা সাংবাদিকদের তুলনায় টিভি মিডিয়ায় কাজ করা সাংবাদিকদের জন্যে পাকিস্তানের আইন দ্বিগুন ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে কাজ করতে যাওয়া সাংবাদিকদের জন্যে তিনগুন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সাংবাদিকরা পাকিস্তানে যান খবর সংগ্রহ করতে, এই সাংবাদিকদের এক তৃতীয়অংশকে পাকিস্তানি আইনে বিভিন্ন অপরাধের জন্যে অভিযুক্ত করা হয়, আর এক তৃতীয়অংশকে শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদের জন্যে অভিযুক্ত করা হয়। বাকিদের বিরুদ্ধে বৈদ্যুতিন অপরাধ অথবা মানহানির মামলা করা হয়। পাকিস্তানে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি যে অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তা হল 'রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কাজ করা' বা 'রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে অসম্মান করা'। এই অপরাধেই গ্রেপ্তার করা হয় অধিকাংশ সাংবাদিককে। অন্যান্য অভিযোগগুলি হল 'অস্ত্র বা বিস্ফোরক রাখা', 'মাদক চোরাচালান', 'নিষিদ্ধ সাহিত্য রাখা' এবং 'নাগরিকদের হয়রানি করা'।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের পুলিশ খুব অল্প মামলাই শেষ করে। তার অর্ধেক বিচারের জন্যে উপযুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়। যদিও যতজন সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা হয়, তার ৬০% মামলায় বিচার শেষই হয় না। বছরের পর বছর চলতে থাকে। বেশিরভাগ সাংবাদিককে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করার সুযোগটুকুও দেওয়া হয় না। ১৭টি বিচারের মধ্যে ১০ টি ক্ষেত্রেই কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় না, তাই বিচার চলতে থাকে বছরের পর বছর।
রিপোর্টে বলা হয়েছে পাকিস্তানে কোনো সাংবাদিক আদতে ন্যায়বিচার পান না। এমনিতেই পাকিস্তানের অধিবাসী যে সব সাংবাদিকরা রয়েছেন, তাঁদের অবস্থাও তেমন ভাল নয়। তাঁদের জীবনযাত্রায় যেমন দারিদ্র রয়েছে, তেমন রয়েছে সরকারি বৈষম্যের শিকার হওয়ার ঘটনা। ইতিমধ্যেই পাকিস্তানে ১৫,০০০ সাঙ্গাবাদিক কর্মহীন হয়েছেন এবং এই সংখ্যাটা গত কয়েক সপ্তাহে ব্যাপকহারে বেড়ে চলেছে। নিবন্ধে পরিস্কার করে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে গণমাধ্যম বা মিডিয়া এই মুহূর্তে প্রবল সঙ্কটে রয়েছে।