![]() |
জম্মুর একটি বুথ |
আজ খবর (বাংলা), শ্রীনগর, জম্মু ও কাশ্মীর, ২৮/১১/২০২০ : কাশ্মীর উপত্যকা থেকে ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা অবলুপ্তির পর এই প্রথম সেখানে নির্বাচন শুরু হল। আজ থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে শুরু হয়েছে জেলা উন্নয়ন পর্ষদের নির্বাচন (DDC)।
তীব্র শীতকে উপেক্ষা করেই আজ জম্মু ও কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে নির্বাচনের বুথগুলিতে ভোট দিতে এসেছেন। জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন জেলায় স্কুল এবংকলেজগুলিকে বুথ করা হয়েছে। সেখানেই প্রচুর পরিমাণে শীত বস্ত্র পরিহিত মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। লাইনে দাঁড়ানো প্রচুর মানুষের ভীড় বুঝিয়ে দিচ্ছে আজ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ভোট দিতে এসেছেন।
আজ ২৮ তারিখ থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে জেলা উন্নয়ন পর্ষদের নির্বাচন শুরু হল, চলবে ডিসেম্বর মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত, নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হবে ডিসেম্বরের ২২ তারিখে। মোট ৮ দফায় নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে। জম্মু ও কাশ্মীরে মোট আসন সংখ্যা ২৮০, তার মধ্যে আজ ৪৩টি আসনে ভোট করা হচ্ছে। এর মধ্যে ২৫টি আসন রয়েছে কাশ্মীরে এবং ১৮টি আসন রয়েছে জম্মুতে। ২৮০টি আসনের মধ্যে জম্মুতে রয়েছে ১৪০টি আসন এবং কাশ্মীরে রয়েছে মোট ১৪০ টি আসন। জেলা উন্নয়ন পর্ষদের ভোটের সাথেই সম্পন্ন হবে আরবান লোকাল বডির ভোট. এই নির্বাচনে শূন্য রয়েছে মোট ২৩৪টি আসন।
![]() |
তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহেবুবা মুফতি, ফারুক আবদুল্লা ও ওমর আবদুল্লা (বাঁদিক থেকে) |
এই নির্বাচনের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় রয়েছে, যেটা হল জম্মু ও কাশ্মীরের ১০টি রাজনৈতিক দল এবারে জোট বেঁধে লড়াই করছে, যে জোটের নাম দেওয়া হয়েছে Peaople Aliance For Gupkar Decleration. এই জোটের মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল কনফারেন্স, পিপলস ডেমোক্রেটিভ পার্টি (পিডিপি), পিপলস কনফারেন্স, সিপিআইএম ইত্যাদি। এই গুপকার জোটের প্রেসিডেন্ট হলেন ফারুক আবদুল্লা এবং সম্পাদক মেহেবুবা মুফতি।
এই নির্বাচনটা করানো প্রশাসনের কাছে ছিল বেশ বড় চ্যালেঞ্জ। প্রথমত এই সময় জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় তুষারপাত হয়, তীব্র শীত উপেক্ষা করে কত মানুষ ভোট দিতে আসবেন সেটা ভাবাচ্ছিল প্রশাসনকে। প্রত্যেক জেলাশাসকের কাছে এমন সব সামগ্রী দেওয়া হয়েছে, যাতে শীত খুব বেড়ে গেলেও ভোটপর্ব চালিয়ে যাওয়া যায়। এমনকি তুষারপাত হলেও বরফ কাটার মেশিন পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, করোনা আবহে একসাথে প্রচুর মানুষের জমায়েত হলেও মুশকিল। তাই আজ প্রত্যেকটা বুথে দেখা গেল লাইনে দাঁড়ানো ভোট দিতে আসা মানুষদের সামাজিক দূরত্বের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে, তাছাড়া থার্মাল গান দিয়ে প্রত্যেককে পরীক্ষা করাও হচ্ছে। দেশে করোনা আবহে এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।
![]() |
শ্রীনগরের একটি বুথ |
তৃতীয়ত, এই নির্বাচনকে ঘিরে জঙ্গী হামলার আশঙ্কা রয়েছে। বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের উস্কানি রয়েছে। সেক্ষেত্রে এই নির্বাচনকে ঘিরে গোটা উপত্যকাকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। সবরকম সতর্কতা বজায় রাখতে হয়েছে। যদি তেমন কোনো ঘটনা ঘটে, তার জন্যে আলাদা করে হাসপাতাল ও এম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও করতে হয়েছে প্রশাসনকে। আজ দুপুর ২টো পর্যন্ত চলবে ভোটদান উৎসব।