আজ খবর (বাংলা), বেজিং, চীন, ১৮/০৯/২০২০ : চীন থেকে গত বছর শুধুই করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছিল তা নয়, গত বছর চীন থেকে ছড়িয়ে পড়েছিল এক ধরনের ব্যাকটেরিয়াও। যে ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন কয়েক হাজার চীনা নাগরিক।
চীনের গানসু প্রদেশের ল্যাংঝোউ শহরের হেলথ কমিশনের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর উত্তর-পূর্ব চীনের একটি বায়োফার্মাসিউটিকাল কোম্পানী থেকে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়েই লিক করে গিয়েছিল এবং সেই ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মোট ৩,২৪৫ জন মানুষ। ব্রুসেলা ধরনের ব্যাক্টেরিয়াটি প্রাণীদেহের মাধ্যমেই ছড়িয়ে পড়ে এবং তা রীতিমত ছোঁয়াচে। হেলথ কমিশনের রিপোর্ট বলছে, গত বছর জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে আগস্ট মাসের শেষ দিক পর্যন্ত চীনের ঝংমু ল্যাংঝোউ বায়োফার্মাসিউটিকাল ল্যাবরেটারী থেকে এই ব্যাকটেরিয়া লিক করে বেরিয়ে পড়েছিল।শুরু হয়ে গিয়েছিল সংক্ৰমনও।
হেলথ কমিশনের রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে যে, প্রথমে যে ৩,২৪৫ জনের শরীরে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হয়েছিল , তারপরেও শহরের মোট ৩ কোটি জনমানবের মধ্যে মোট ২১,৮৪৭ জনের শরীরে টেস্ট করা হয়েছিল এবং তার মধ্যে আরও ১১,৪০১ জনের শরীরে রেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল।
এই ব্যাকটেরিয়া অসুখকে 'মাল্টা ফিভার' বা 'মেডিটেরানিয়ান ফিভার' বলা হয় । এই ব্যাকটেরিয়া সংক্ৰমণ হলে শরীরে জ্বর, ক্লান্তিভাব, গায়ে-হাতে-পায়ে ব্যাথা, মাসল পেইন এবং মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়। এর সাথে মানবদেহে আর্থ্রাইটিসের মত রোগের দেখা দেয়, যা কোনোদিনও সেরে ওঠে না। এর সাথে সাথে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ থেকে রস চুঁইয়ে পড়তে দেখা যায়। শরীরে একটা অদ্ভুত ব্যাথা ব্যাথা ভাব শুরু হয় বলে জানিয়েছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা।
সাধারণত ব্রুসেল ভ্যাকসিন পশুদের জন্যেই প্রস্তুত করা হয়, কিন্তু এক্ষেত্রে এই ব্যাকটেরিয়া বর্জ্য নষ্ট করতে মেয়াদ উত্তীর্ন কীটনাশক ও স্যানিটাইজার প্রয়োগ করা হয়েছিল, যার জন্যে ব্যাকটেরিয়াগুলোকে নষ্ট করে ফেলা যায় নি। তবে এই ব্যাকটেরিয়াকে চীনের একটি শহরের মধ্যেই রুখে দেওয়া গিয়েছিল বলেই যা রক্ষে ! এই ব্যাকটেরিয়া গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লেই আরও একটা অতিমারীর সাথে লড়তে হত মানব সভ্যতাকে।
Loading...