আজ খবর (বাংলা), কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ২৯/০৯/২০২০ : আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে নির্ভুল অঙ্ক কষে এগোতে চাইছে বিজেপি, কিন্তু বিজেপিকে সবচেয়ে বেশি যেটা ভাবাচ্ছে, তা হল রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক। আপাতত এই সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক নিয়েই বেশ চিন্তিত পদ্ম .শিবির।
গত লোকসভা ভোটে রাজ্য থেকে মোট ১৮টি আসন জিতে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের ঘাড়ে রীতিমত নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করে দিয়েছিল বিজেপি। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি রাজ্যের ভোটারদের মধ্যে প্রত্যাশা অনেকটাই বাড়িয়েছে। এবার মূল লক্ষ্য বিধানসভা নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে বিজেপি শুধুই ভাল ফল করতে চাইছে তা নয়, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসতে চাইছে। তাই লড়াইটা এবার বেশ কঠিন। সেই কারনে প্রতিটা পদক্ষেপ অত্যন্ত হিসেবে কষে এগোতে চাইছে বিজেপি। প্রায় প্রতি মাসেই নেওয়া হচ্ছে নতুন নতুন স্ট্র্যাটেজি।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি বেশ কিছু সমীক্ষা করিয়েছে, যে সমীক্ষার ফলাফলগুলোকে আতস কাঁচের নিচে রেখে নিখুঁতভাবে পরীক্ষা করে দেখে নিতে চাইছেন বিজেপির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক নেতারা। সেই আতস কাঁচের নিচেই এবার এমন একটা তথ্য উঠে এসেছে, যা ভীষণভাবে ভাবাচ্ছে বিজেপিকে।আর সেটা হল সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক। দেখা গিয়েছে রাজ্যে মোট ২৯৫টি আসনের মধ্যে অন্তত ৭৫টি আসনের ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুরাই ভোট জয়ের নির্ণায়ক হয়ে উঠতে পারে। এবং তার পাশাপাশি অন্তত ২৫টি আসনে এই সংখ্যালঘুরা ভোটে জয়ের ব্যাপারে আংশিকভাৱে প্রভাব ফেলতে পারে। এই অঙ্কটাই ভাবাচ্ছে বিজেপিকে।
এর আগে তৃণমূল কংগ্রেস জোট ছাড়াই এককভাবে যে বিধানসভা নির্বাচনগুলোতে জিতে এসেছে, সেখানেও এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটব্যাঙ্ক বিরাট প্রভাব ফেলেছে। কোনোভাবে যদি এই ১০০টি আসন বিজেপির হাতছাড়া হয়ে যায়, তাহলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে বিজেপির সামনে। তাই এখন থেকেই বিজেপির সংখ্যালঘু সেলকে আরও সক্রিয় করার কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকীকেও দিল্লীতে নিয়ে গিয়ে কথা বলতে চাইছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। বিশেষ করে কৈলাস বিজয়বর্গীয় এই বিষয়টিকে নিয়ে আলাদা করে চিন্তা ভাবনা করতে চাইছেন ।
এদিকে বঙ্গ বিজেপিতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদ না পেয়ে প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি রাহুল সিনহা তাঁর হতাশা প্রকাশ্যে এনে ফেলেছেন। সম্প্রতি মুকুল রায়কে সর্বভারতীয় বিজেপির সহ সভাপতি, অনুপম হাজরাকে সর্বভারতীয় বিজেপির সহ সম্পাদক এবং দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু সিং বিস্তাকে জাতীয় বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র করে দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি জগৎ প্রসাদ নাড্ডা। অথচ দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে বিজেপির হয়ে লড়াই চালিয়েও তেমন কোনো গুরুত্ত্বপূর্ন পদ পান নি রাহুল সিনহা। এই ব্যাপারে নিজের হতাশা গোপন রাখেন নি রাহুলবাবু। এদিকে আবার শোনা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ থেকেই আরও একজন প্রতিমন্ত্রী ও পূর্ণমন্ত্রী নেওয়া হবে কেন্দ্র সরকারের মন্ত্রিসভায়। যে দুটি মন্ত্রকে মন্ত্রী করে বাংলার কাউকে নিয়ে যাওয়া হবে, তার একটি সম্ভবত ভারতীয় রেল। বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গের ঝুলিতে হয়ত আরও উপহার রাখতে চলেছে কেন্দ্র সরকার।