বিহারের ভোটের আগে ১৪ হাজার কোটি টাকার সড়ক শিলান্যাস নরেন্দ্র মোদীর - আজ খবর । দেখছি যা লিখছি তাই । ডিজিটাল মিডিয়ায় অন্যতম শক্তিশালী সংবাদ মাধ্যম

Sonar Tori


বিহারের ভোটের আগে ১৪ হাজার কোটি টাকার সড়ক শিলান্যাস নরেন্দ্র মোদীর

Share This


বিহারের ভোটের আগে ১৪ হাজার কোটি  টাকার সড়ক শিলান্যাস নরেন্দ্র মোদীর

আজ খবর (বাংলা), পাটনা, বিহার, ২২/০৯/২০২০ : প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বিহারে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১৪ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ৯টি জাতীয় সড়ক প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন এবং রাজ্যে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা প্রকল্পের সূচনা করেছেন ।

এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই মহাসড়ক প্রকল্পগুলির মাধ্যমে বিহারে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে । এই মহাসড়ক প্রকল্পে তিনটি বড় সেতু নির্মাণ করা ছাড়াও চার লেনের মহাসড়ককে ছয়লেনে পরিণত করা হবে । তিনি বলেছেন, বিহারে সমস্ত নদীর ওপর সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে একবিংশ শতাব্দীর চাহিদা পূরণ হবে এবং সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলি চওড়া ও মজবুত করা হবে । 

আজকের দিনটি শুধুমাত্র বিহারের জন্যই ঐতিহাসিক দিন নয়, বরং তা সারা দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন। আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের আওতায় সরকার গ্রামগুলির সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, আর সেই কাজটি বিহার থেকে সূচনা হল । তিনি বলেছেন, এই প্রকল্পের আওতায় এক হাজার দিনের মধ্যে অপটিক্যাল ফাইবার কেবলের সাহায্যে ৬ লক্ষ গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে । যার মধ্যে বিহারের ৪৫ হাজার ৯শো ৪৫টি গ্রাম আছে । তিনি বলেছেন, বছর কয়েক আগেও গ্রামের থেকে শহরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি ছিল। 



প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেনের ক্ষেত্রে ভারত প্রথম সারির দেশ হিসেবে সারা বিশ্বের নিরীখে উল্লেখযোগ্য স্থান করে নিয়েছে । ইউ পি আই-এর মাধ্যমে আগস্ট মাসে প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে । ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে দেশের গ্রামগুলিতে উন্নতমানের উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট ব্যবস্থার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেছেন সরকারের উদ্যোগের ফলে দেশে দেড় লক্ষ গ্রামপঞ্চায়েতে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা  গড়ে উঠেছে এবং ৩ লক্ষ কমন সার্ভিস সেন্টার তৈরী হয়েছে ।

আরও দ্রুত গতির সংযোগের উপযোগিতার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, এর মাধ্যমে  ছাত্র-ছাত্রীরা লেখাপড়া করার আরও ভাল উপাদান পাবে, টেলিমেডিশিন ব্যবস্থায় চিকিৎসার সুবিধে নেওয়া যাবে । কৃষকদের আবহাওয়া সম্পর্কিত সর্বশেষ তথ্য ছাড়াও দেশে নতুন প্রযুক্তি, বাজারের পরিস্থিতি এবং বীজের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া সুবিধা হবে । কৃষকরা সারা দেশে এবং বিশ্বে খুব সহজেই তাদের উৎপাদিত ফসল পরিবহণ করতে পারবেন । 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশের গ্রামাঞ্চলে শহরের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থার করতে সরকার উদ্যোগী হয়েছে ।

তিনি বলেছেন, আগে পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রের পরিকল্পনা সব জায়গায় সমানভাবে হত না । শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন তিনি রাজনীতির পরিবর্তে পরিকাঠামোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন এবং উন্নয়নে বেশি নজর দিয়েছিলেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখন মাল্টিমডেল পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ౼ যেখানে সবরকমের পরিবহণ ব্যবস্থা পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকবে । বর্তমানে পরিকাঠামোগত প্রকল্পগুলির কাজ যেভাবে হচ্ছে, তা অভূতপূর্ব । ২০১৪ সালের আগের তুলনায় এখন মহাসড়ক দ্বিগুণ পরিমানে নির্মিত হচ্ছে । ২০১৪ সালের আগের সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে এখন মহাসড়ক নির্মাণে ৫ গুন বেশি ব্যয় করা হচ্ছে ।

আগামী চার-পাঁচ বছরে সরকার ১১০ লক্ষ কোটি টাকার বেশি অর্থ পরিকাঠামোতে ব্যয় করবে বলে  ঘোষণা করেছে । এর মধ্যে শুধুমাত্র মহাসড়ক নির্মাণেই ১৯ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ।

শ্রী মোদী বলেছেন, সড়ক এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা সংক্রান্ত পরিকাঠামোর উন্নয়নে বিহারও উপকৃত হচ্ছে । ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী প্যাকেজের ঘোষণা অনুসারে ৩ হাজার কিলোমিটারের বেশি জাতীয় সড়ক নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে । এছাড়াও ভারতমালা প্রকল্পে সাড়ে ৬শো কিলোমিটার জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে । আজ বিহারে জাতীয় সড়ক তৈরির কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে । পূর্ব বিহারের সঙ্গে পশ্চিম বিহারের চার লেনের পাঁচটি সড়ক প্রকল্প এবং উত্তর ভারতের সঙ্গে দক্ষিণ ভারতের যোগাযোগের জন্য ৬টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে ।

শ্রী মোদী বলেছেন, বিহারের যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সব থেকে বড় সমস্যা হল বড় বড় নদী । আর তাই যখন প্রধানমন্ত্রী প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই সময় সেতু নির্মাণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় । প্রধানমন্ত্রী প্যাকেজে গঙ্গা নদীর ওপর ১৭টি সেতু নির্মাণের কাজ চলছে, সেগুলির বেশিরভাগের নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে এসেছে । গন্ডক এবং কোশী নদীর ওপরেও সেতু নির্মাণের কাজ চলছে ।

শ্রী মোদী বলেছেন, পাটনার রিং রোড ও পাটনায় মহাত্মা গান্ধী সেতুর সমান্তরালে আরেকটি সেতু নির্মাণ করার ফলে পাটনা এবং ভাগলপুরের মধ্যে যোগাযোগে গতি আসবে । 

সংসদে গতকাল পাশ হওয়া কৃষি বিলের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কৃষকদের বিভিন্ন বাধা থেকে মুক্ত করার জন্য এই সংস্কারগুলি অত্যন্ত জরুরী ছিল । তিনি বলেছেন, ঐতিহাসিক এই আইনের ফলে কৃষকদের নতুন অধিকার দেওয়া হল । তারা তাদের উৎপাদিত ফসল নিজেদের সিদ্ধান্ত অনুসারে যে কোন জায়গায়, যে কাউকে তাদের পছন্দের দামে বিক্রি করতে পারবেন ।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এর আগের ব্যবস্থায় স্বার্থান্বেষী চক্র তৈরী হয়েছিল, যারা কৃষকদের অসহায়তার সুযোগ নিতো । 

শ্রী মোদী বলেছেন, নতুন সংস্কারের ফলে কৃষকরা এখন কৃষিবাজারের পাশাপাশি অন্যান্য জায়গাতেও তাদের ফসল বিক্রি করতে পারবেন – যেখানে তিনি বেশি দাম পাবেন ।



এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন,পরিবর্তিত সংস্কারের ফলে  একটি রাজ্যের কৃষকরা আলু এবং মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানের কৃষকরা তৈলবীজ থেকে ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি লাভ করতে পারবেন । তিনি বলেছেন, এই সব রাজ্যের কৃষকদের থেকে তেলকলের মালিকরা সরাসরি তৈলবীজ কিনতে পারবেন । মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং পশ্চিমবঙ্গের মত রাজ্য – যেখানে অতিরিক্ত ডালশস্য উৎপন্ন হয়, সেই সব রাজ্যের কৃষকরা গতবছরের তুলনায় ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ বেশি দাম পেয়েছেন, কারণ ডাল মিলগুলি এইসব কৃষকদের থেকে সরাসরি ডালশস্য কিনে নিয়েছে ।

প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, আগের মতই কৃষিবাজারগুলি ব্যবসা-বাণিজ্য চালাবে এবং সেগুলি বন্ধ হবে না । এন ডি এ সরকার গত ৬ বছর ধরে এইসব বাজারগুলির আধুনিকীকরণ এবং কম্পিউটারের ব্যবস্থা করছে । 


শ্রী মোদী দেশের সমস্ত কৃষককে আশ্বস্ত করে বলেছেন, ন্যূনতম সহায়কমূল্যের ব্যবস্থা আগের মতই অব্যাহত থাকবে । তিনি বলেছেন, স্বার্থান্বেষী মহল কৃষকদের বঞ্চনা করার জন্য ন্যূনতম সহায়কমূল্য সংক্রান্ত স্বামীনাথন কমিটির সুপারিশগুলিকে বছরের পর বছর ঠান্ডা ঘরে রেখে দিয়েছিল । সরকার নিয়মমত প্রতিটি মরশুমে ফসলের ন্যূনতম সহায়কমূল্য ঘোষণা করবে । 

প্রধানমন্ত্রী  কৃষকদের  অবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানান, আমাদের দেশের ৮৫ শতাংশ কৃষকই প্রান্তিক অথবা ক্ষুদ্র চাষী। আর তাই কম ফলন হলে তাদের চাষবাসের খরচ বেশি হয় এবং তারা লাভ করতে পারেন না । প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যদি কৃষকরা জোটবদ্ধ হন, তাহলে তারা ফসলের ভাল দাম পাবেন । তারা ক্রেতাদের সঙ্গে ভাল চুক্তি করতে পারবেন । এই সংস্কারগুলির মাধ্যমে কৃষি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়বে, কৃষক আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ পাবেন এবং তাদের উৎপাদিত ফসল আন্তর্জাতিক বাজারে আরও সহজে পৌঁছে যাবে ।

শ্রী মোদী এই প্রসঙ্গে বিহারের পাঁচটি কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী সংগঠনের কথা উল্লেখ করেছেন । এই সংগঠনগুলি একটি বিখ্যাত চাল ব্যবসায়ী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছে । এই চুক্তির আওতায় এই সংগঠনগুলি থেকে চার হাজার টন ধান সংগ্রহ করা হবে । তিনি বলেছেন, বর্তমান সংস্কারের ফলে দুগ্ধজাত শিল্প এবং দুধ উৎপাদনকারীরাও একইভাবে সুফল পেতে পারেন । 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনের সংস্কার করা হয়েছে । আগে এই আইনের জন্য কৃষকদের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হত । বর্তমানে ডালশস্য, তৈলবীজ, আলু, পেঁয়াজ ইত্যাদিকে বিধিনিষেধের বাইরে নিয়ে আসা হয়েছে । এখন থেকে দেশের কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত ফসল সহজেই বিপুল পরিমাণে হিমঘরে রাখতে পারবেন । আমাদের দেশে যখন হিমঘর সংক্রান্ত আইনি জটিলতাগুলি দূর করা হবে, তখন হিমঘরের ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে ।

শ্রী মোদী  বলেছেন, স্বার্থান্বেষী কিছু মহল কৃষি ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক সংস্কারের বিষয়ে চাষীভাইদের ভুল বোঝাচ্ছে । সরকার ২০১৪ সালের আগের পাঁচ বছরের হিসেবে পরবর্তী পাঁচ বছরে ২৪ গুণ বেশি ডালশস্য এবং তৈলবীজ সংগ্রহ করেছে । এবছর করোনার সময়ে রবি মরশুমে রেকর্ড পরিমাণে গম কৃষকদের থেকে কেনা হয়েছে । 

এবছর রবি মরশুমে গম, দানাশস্য, ডালশস্য এবং তৈলবীজ সংগ্রহ করার জন্য কৃষকদের মোট ১ লক্ষ ১৩ হাজার কোটি টাকা ন্যূনতম সহায়কমূল্য দেওয়া হয়েছে । গত বছরের তুলনায় যা ৩০ শতাংশ বেশি ।

করোনার সময়ে সরকার রেকর্ড পরিমাণে শস্য কেনা ছাড়াও কৃষকদের রেকর্ড অর্থ প্রদান করেছে । আধুনিক ভাবনায় কৃষকদের জন্য নতুন ব্যবস্থা গড়ে তোলা একবিংশ শতাব্দীর ভারতের অন্যতম দায়িত্ব ।

 

Loading...

Amazon

https://www.amazon.in/Redmi-8A-Dual-Blue-Storage/dp/B07WPVLKPW/ref=sr_1_1?crid=23HR3ULVWSF0N&dchild=1&keywords=mobile+under+10000&qid=1597050765&sprefix=mobile%2Caps%2C895&sr=8-1

Pages