আজ খবর (বাংলা), নতুন দিল্লী, ভারত, ২৮/০৮/২০২০ : শরীর থেকে ক্রিকেট বলের সাইজের টিউমার বের করার পরের দিন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় বসলেন ২১ বছরের শশাঙ্ক ক্ষত্রী।
সামনেই বিশ্ব বিদ্যালয়ের ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা, অথচ কোমরের কাছে প্রচন্ড যন্ত্রনায় ছটফট করছিল শশাঙ্ক। ক্রমেই যেন তার সমস্ত শরীর অসাড় হয়ে আসছিল। তার পরিবার বুঝে নিয়েছিল এই বছর শশাঙ্কের আর পরীক্ষা দেওয়া হবে না। কেননা ডাকরারা পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, এখনই অস্ত্রপচার করতে হবে শশাঙ্কের শরীরে। কিন্তু সামনেই পৰীক্ষা, তাহলে কি পরীক্ষার পরেই অস্ত্রপ্রচার করা হবে শশাঙ্কের শরীরে ? এই প্রশ্নের সামনে পড়ে শশাঙ্কের পরিবার সিদ্ধান্ত নেয়, পরীক্ষা না দেওয়া গেলেও আগে শশাঙ্কের প্রাণ বাঁচাতে হবে। সেইমত শশাঙ্ককে জরুরী ভিত্তিতে ভর্তি করা হয় গুরুগ্রামের আর্টেমিস হাসপাতালে।
ভর্তি করার পরের দিনেই শশাঙ্কের শরীরে অপারেশন করেন ডাক্তারেরা। শশাঙ্কের শরীরের পেলভিস (স্যাকরাম বোন) থেকে বেরিয়ে আসে একটা আস্ত ক্রিকেট বলের সমান আকারের টিউমার। অপারেশনের পর সারাদিন আচ্ছন্ন ছিলেন শশাঙ্ক। তার পরের দিনেই তার প্রথম পরীক্ষা। শরীর থেকে অত বড় সাইজের টিউমার বের হয়ে যাওয়ায় অনেকটা স্বস্তি বোধ করছিল শশাঙ্ক। সকালবেলাতেই সে পরীক্ষা দেওয়ার জন্যে ডাক্তাদের কাছে জোরাজুরি করতে থাকে, তারপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগীতায় সে হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই পরীক্ষা দিতে শুরু করে। এইভাবে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা হয়েও গিয়েছে। এখনো বিছানায় শুয়ে শশাঙ্ক পরীক্ষা দিয়ে চলেছে। বুকে ভর দিয়ে কোনোরকমে সে লিখে চলেছে একের পর এক প্রশ্নের উত্তর।
ডাক্তারেরা জানিয়েছেন শশাঙ্কের সুস্থ হয়ে উঠতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে, তারপর বাড়ি ফিরে গিয়েও তাকে বেশ কিছুদিন থাকতে হবে বিছানায় , নিতে হবে পর্যাপ্ত বিশ্রাম। ততদিনে হয়ত তার পরীক্ষার রেজাল্টও প্রকাশিত হয়ে যাবে। আর সেই রেজাল্ট যদি ভাল হয়, তাহলে বলতেই হবে যে শশাঙ্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা এবং জীবনের পরীক্ষা দুটোতেই যথেষ্ট ভাল ফল করেছে।