আজ খবর (বাংলা), নতুন দিল্লী, ১১/০৩/২০২০ : অবশেষে 'হাত' ছেড়ে পদ্মে হাত রাখলেন গোয়ালিয়ারের 'মহারাজা' জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। কিছুক্ষণ আগেই বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডার উপস্থিতিতে দলের সদর দফতরে এসে বিজেপিতে যোগ দিলেন জ্যোতিরাদিত্য।
আজ দিল্লীর দীনদয়াল উপাধ্যায় ভবনে বিজেপির সদর দফতরে বিজেপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করলেন সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে আসা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তাঁকে সদর দফতরে বরণ করে নেন বিজেপি সভাপতি জয় প্রকাশ নাড্ডা। সাংবাদিক বৈঠকে জে পি নাড্ডা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্যে জ্যোতিরাদিত্যকে আহবান জানান, সেইসঙ্গে রাজমাতা বিজয় রাজে সিন্ধিয়াকে স্মরণ করেন; যিনি জন সংঘ তথা বিজেপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। এরপর নাড্ডা জ্যোতিরাদিত্যের হাতে সদস্যপদ ও পুস্পস্তবক তুলে দেন।
সাংবাদিকদের সামনে বসে জ্যোতিরাদিত্য বলেন, "আমার জীবনে দুটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে আছে, প্রথমটি ২০০১ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর, যেদিন আমি আমার বাবাকে হারিয়েছি, আর দ্বিতীয়টি হল ১০ই মার্চ ২০২০ (গতকাল)। এই দুটো দিন আমার জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকবে। গত ১৮ মাস ধরে আমার সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে যাচ্ছিল। সেই কংগ্রেস এখন আর নেই, এখনকার কংগ্রেস নতুনদের কথাও শোনে না, তাদের মান্যতাও দেয় না, এমনকি তাদের সন্মানও করে না। তাই আমি কংগ্রেস ছেড়ে দিয়েছি, আর এই তারিখ দুটি আমার জীবনে অত্যন্ত ব্যাথাতুর দিন, গত ১৮-১৯ বছর ধরে আমি কংগ্রেসের সেবা করেছি।"
জ্যোতিরাদিত্য বলেন, "কংগ্রেস কথা রাখেনি, কংগ্রেস মধ্যপ্রদেশের ইস্তাহারে বলেছিল, ক্ষমতায় এসে মধ্যপ্রদেশের কৃষকদের কৃষি ঋণ মকুব করে দেবে ১০ দিনের মধ্যে, কিন্তু তা আদৌ হয় নি, কৃষকরা বোনাসও পেল না। প্রতিমাসে তাদের যে ভাতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, কংগ্রেস সেই কথাও রাখল না। এই কংগ্রেসে সত্যের সন্মান নেই। এই কংগ্রেস আর আগের মত নেই। ভারতমাতার সেবা করতে গেলে রাজনীতি একটি মঞ্চ মাত্র, তা সে যে দলই হোক । আমি কংগ্রেসে থেকে ভারতমাতার সেবা করতে পারছিলাম না। এখনকার কংগ্রেস দুর্নীতিতে ছেয়ে গিয়েছে। মধ্যপ্রদেশে এখন বালি মাফিয়াদের জয়জয়কার। আজ আমার বলতে বাধা নেই যে, আমি কাজ করার জন্যে বিজেপিতে সঠিক মঞ্চ খুঁজে পেয়েছি।কংগ্রেসে আমার দমবন্ধ হয়ে আসছিল।"
এরপর প্রধানমন্ত্রীর স্তুতি গেয়ে জ্যোতিরাদিত্য বলেন, "গোটা দেশ নরেন্দ্র মোদিকে দু' দু'বার প্রচন্ড জনাদেশ দিয়েছে। গোটা বিশ্বে দেশের মাথা উঁচু করেছেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর নেতৃত্বকে সন্মান জানিয়ে আমি বিজেপির অন্যান্য কর্মীদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসাথে কাজ করতে চাই।"
আজ থেকে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে আর কংগ্রেস নেতা নয়, বরং বিজেপি নেতা হিসেবেই চিনতে হবে। কংগ্রেসে থেকেও কেন্দ্র সরকারের সিটিজেনস এমেন্ডমেন্ট আইনকে তিনি সমর্থন করেছিলেন। আর আজ তিনি নিজেই চলে এলেন পদ্ম শিবিরে। তবে আজ তিনি নিজে যোগদান করলেও, এখনও পর্যন্ত তাঁর সাথে তাঁর অনুগামী বিধায়করা, অর্থাৎ যে ২২ বিধায়ক যাঁরা তাঁকে দেখেই কংগ্রেস ছেড়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন , তাঁরা কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেউই বিজেপিতে যোগ দেন নি।
Loading...