আজ খবর (বাংলা), কলকাতা,১৮/০২/২০২০ : চলে গেলেন জনপ্রিয় অভিনেতা তাপস পাল। ৬১ বছর বয়সে আজ মুম্বইয়ে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করলেন। তাঁর প্রয়ানে শোকস্তব্ধ টালিগঞ্জ সিনেমা পাড়া।
১৯৮০ সালে পরিচালক তরুণ মজুমদারের পরিচালনায় তাপস পালকে সাধারণ মানুষ প্রথম দেখেন 'দাদার কীর্তি' ছবিতে, আর সেই ছবিতে নায়কের ভূমিকায় অসাধারণ অভিনয় করে দর্শকমহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়ে নিয়েছিলেন তিনি, এর পর 'সাহেব', 'গুরুদক্ষিণা', 'ভালবাসা ভালবাসা' ছবিগুলিতে অভিনয় করে বাঙালি দর্শকের মনের মনিকোঠায় চিরকালের জন্যে জায়গা তৈরী করে নেন তাপস পাল।
বস্তুত: মহানায়ক উত্তম কুমারের পর তাপস পাল বাংলা সিনেমায় শূন্যস্থান পূরণ করতে অনেকটাই সফল হয়েছিলেন, তাঁর স্টার ইমেজ কেড়ে নিয়েছিল আপামর বাংলা সিনেমা প্রেমীদের মন। এরপর অসংখ্য বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। বলিউডে তাঁর প্রথম হিন্দি ছবির নাম হল 'অবোধ'। এই ছবিতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন মাধুরী দীক্ষিত। হুগলি মহসিন কলেজ থেকে জীব বিজ্ঞানে স্নাতক হয়েছিলেন তাপস পাল; নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে কলকাতার টলিউড পর্যন্ত তাঁর এই গ্ল্যামার সফরকে কুর্নিশ করেছিল বাঙালি ।
গ্ল্যামার জগতের মধ্যগগনে থাকতে থাকতেই তিনি যোগ দিয়েছিলেন রাজনীতিতে। তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়িয়ে বিপুল ভোটে জিতে তিনি কৃষ্ণনগরের সাংসদ হয়েছিলেন। কিন্তু কখন যেন কালো মেঘ এসে ঢেকে দিয়েছিল এই উজ্জ্বল তারকাকে। রোজ ভ্যালি নামে একটি চিট ফান্ড সংস্থায় জড়িয়ে পড়েছিলেন তাপস পাল, বেশ কিছুদিন ওড়িশার জেলে তাঁকে হাজতবাস করতে হয়েছিল। শুধু তাই নয়, রাজনীতির মঞ্চেও কিছু বিতর্কিত মন্তব্য তাঁকে যেন আরও অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিল শেষ জীবনে।
বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি স্নায়ুরোগে ভুগছিলেন, চিকিৎসা চলছিল তাঁর। তিনি বেশ কয়েক বছর গ্ল্যামার জগৎ থেকে ছিলেন বহু যোজন দূরে। আজ মুম্বইয়ের বান্দ্রার একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করলেন, সেই সাথে যবনিকা পতন হল এক অসাধারন অভিনেতার অভিনয় জীবনের।
তাপস পাল রেখে গেলেন স্ত্রী সোহিনী পাল ও কন্যা সোহিনী পালকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাপস পালের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোক জ্ঞাপন করেছেন।
Loading...