আজ খবর ( বাংলা), নতুন দিল্লী, ২৬/০২/২০২০ : দিল্লীতে অশান্তির আগুন জ্বলছে এখনও। আজ সকালেও দিল্লীর বেশ কিছু জায়গায় পাথর ছোঁড়া ও আগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৮।
গত পরশু থেকেই জ্বলছে দিল্লীর উত্তর পূর্ব অংশ, সেই অশান্তির আগুনে আজ গুরু তেগ বাহাদুর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে আরও ৪ জনের, এখনো পর্যন্ত দিল্লীর গন্ডগোলের জন্যে প্রাণ হারালেন মোট ১৮ জন মানুষ। উত্তর পূর্ব দিল্লী থেকে গাজিয়াবাদ যাওয়ার সব রাস্তা গতকাল সন্ধ্যে থেকেই ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে দিল্লী পুলিশ।
উত্তর পূর্ব দিল্লীর স্কুলগুলিতে বন্ধ রাখা হয়েছে পরীক্ষা। বন্ধ রাখা হয়েছে এলাকার মদের দোকানগুলোও। দিল্লী ও উত্তর প্রদেশের সীমান্ত রাস্তাগুলিও সিল করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে আন্দোলনকারীদের পাথরের আঘাতে জখম শাহদারার ডিসিপি অমিত শর্মার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ খোঁজ খবর নেন শর্মার আত্মীয় স্বজনদেরদের থেকে।
বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা সিদ্ধারামাইয়া আজ বলেছেন, "স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের উচিত পুলিশকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া এবং দেশের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। তাঁর শক্ত হাতে দিল্লীর অশান্তি মোকাবিলা করা উচিত। এত মানুষ আহত হয়েছেন, এত লোক মারা যাচ্ছেন, অমিত শাহের উচিত শক্ত হাতে বিষয়টি দেখা, কেননা গান্ধীজি বলেছেন, চোখের বদলে চোখ নিতে চাইলে একদিন বিশ্ব সংসার অন্ধ হয়ে যাবে।"
মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা নবাব মালিক বলেছেন, "গুজরাটে যা কিছু হচ্ছে, তা ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে।" কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী অভিযোগ করেছেন, "দিল্লীর হিংসা পরিকল্পিত, সরকারের কাছে গোয়েন্দা রিপোর্ট ছিল না ? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উচিত এর দায় নিয়ে পদত্যাগ করা;"
দিল্লীর উত্তর পূর্ব অংশের অবস্থা এখনো বেশ খারাপ। বিশেষ করে গোকুলপুরী, কবির নগর, মোস্তাফাবাদ অঞ্চলগুলিতে আজ গন্ডগোল হয়েছে। রাস্তা জুড়ে সেখানে পরে রয়েছে ইঁট পাথর। রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরা এসে বাইকে, গাড়িতে বা বাজারে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। পেট্রল বোমা, ইঁট - পাথর ছুঁড়ছে। এখনো রীতিমত জ্বলছে দিল্লির বড় একটা অংশ। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে দিল্লীর বড় একটা অংশ জুড়ে।
এদিকে দিল্লীর এই অশান্তি নিয়ন্ত্রণ করতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দেশের জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে। গতকালই রাত্রে অজিত দোভাল উত্তর পূর্ব দিল্লীর জাফরাবাদ, সিলমপুর এলাকায় নিজে গিয়েছিলেন এবং সেই অঞ্চলগুলির স্থানীয় নেতাদের সাথে কথা বলেছেন। এরপর দোভাল সরাসরি প্রধানমন্ত্রী ও ক্যাবিনেটকে রিপোর্ট করবেন বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে দিল্লীর অশান্তি নিয়ে ফেক ভিডিওয় ছাড়িয়ে গেছে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে। তাই সন্দেহ দানা বাঁধছে, এই অশান্তির পিছনে আইএসআই বা সরাসরি পাকিস্তানের হাত রয়েছে কিনা, সেটাও তদন্ত করে দেখার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Loading...