![]() |
বন্ধের দিন শুনশান রাজপথ |
আজ খবর (বাংলা), কলকাতা, ০৮/০১/২০২০ : দেশের বেশ কিছু ট্রেড ইউনিয়ন, ছাত্র সংগঠন ও বাম দলগুলির ডাকে আজ ছিল ভারত বন্ধ। পশ্চিমবঙ্গে বামেদের ডাকা এই বন্ধকে সমর্থন করেছে প্রদেশ কংগ্রেস। কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের নীতি ছাড়াও মোট ১২ দফা দাবি জানিয়ে আজ ভারত বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল।
আজকের বন্ধে রাজ্য জুড়ে মিশ্র সাড়া পাওয়া গিয়েছে। কোথাও কোথাও দোকান বাজার বন্ধ থাকলেও সরকারি বাস চলেছে প্রচুর পরিমাণে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে অশান্তির খবর পাওয়া গিয়েছে। আজকের বন্ধে আংশিক সাড়া মিললেও বামফ্রণ্টের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে গোটা দেশেই সতস্ফুর্ত বন্ধ হয়েছে। আজ আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের দপ্তরে বসে মহম্মদ সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, "এখানে বন্ধ পুরোপুরি সফল হয়েছে। রাজ্যের মানুষ জানিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূলের গুন্ডামি আর চলবে না। তৃণমূলের মুখোশ খুলে পড়েছে। গোটা দেশেই আজ ধর্মঘট সফল হয়েছে। যারা বামপন্থায় বিশ্বাস করেনা না, তাঁরাও আজ ধর্মঘটকে সফল করে তুলেছেন। কিন্তু আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগীর থেকে শিখে এসে এখানেও পুলিশ দিয়ে আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। নোটবন্দির সময় যিনি দালালি করেছিলেন, অনশনের নামে তিনি ভন্ডামি করেছিলেন, শহীদ দিবসের নামে তিনি প্রতি বছর নাটক করেন।মানুষ তাঁর দ্বৈত রূপ দেখেছেন। রাজ্যের শিল্পকে তিনিই নষ্ট করে দিয়েছেন। এখন মমতা, দিলীপ এবং মোদী এক শুরে কথা বলছেন।" মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে মহম্মদ সেলিম নরেন্দ্র মোদিকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েন নি, তিনি বলেন,"কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদির সরকার দেশকে ক্ষতি করে চলেছে সব দিক থেকে, মোদী, মমতা বা দিলীপের প্রজন্ম দেশের ক্ষতি করে আর ঐশীর প্রজন্ম দেশকে রক্ষা করার চেষ্টা করে চলেছে। কেন্দ্র সরকারকে আয়না দেখানোর কাজ করছে ছাত্ররা।"
![]() |
বন্ধের দিনেও বিনোদনের পসরা |
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজকের বন্ধের ইস্যুগুলিকে সমর্থন করলেও ধর্মঘটকে সমর্থন করেন নি। তাঁর বক্তব্য এতে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয়। এভাবে আন্দোলন না করে গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করাই উচিত। মমতা বলেন, "আন্দোলনের নামে কোথাও গুন্ডামি, কোথাও দাদাগিরি, একে আন্দোলন বলে না; বামফ্রণ্ট সস্তায় পাবলিসিটি পেতে চাইছে। ওরা এই রাজ্যে সাইনবোর্ডে পরিণত হয়েছে, এখানকার সিপিএমের চেয়ে কেরালার সিপিএম অনেক ভাল, মানুষের যদি কোনো ক্ষতি ওরা করতে চায় তাহলে আমি সেটা বরদাস্ত করব না।"
আজ ধর্মঘটের দিন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে অশান্তির খবর এসেছে। কলকাতার যাদবপুরে এবং বড়বাজারে পুলিশের সাথে গন্ডগোল বেঁধে যায় আন্দোলনকারীদের, রাসবিহারী এভিনিউতে পথ অবরোধের সময় পুলিশের সাথে গন্ডগোল বেঁধে যায়। খড়্গপুর, পশ্চিম বর্দ্ধমান, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর, শিলিগুড়ি, কোচবিহার এবং মালদহে আজ অশান্তির খবর পাওয়া গিয়েছে।
মালদহের সুজাপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারেই পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে ব্যাপক গন্ডগোল বেঁধে যায়। পুলিশ প্রথমে আন্দোলনকারীদের সরে যেতে বললেও কেউ সরে যায় নি, এর কিছুক্ষণ পর থেকেই এই এলাকায় গন্ডগোল বেঁধে যায়। পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে উত্তপ্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে। অসমর্থিত সূত্রে জানা গিয়েছে আজ সুজাপুরে পুলিশ শূন্যে গুলিও চালিয়েছিল। ওই গন্ডগোলের সময় বেশ কিছু গাড়ি ভাংচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
Loading...