আজ খবর, ওয়াসিংটন, ২৮/১০/২০১৯ : আইএসআইএস জঙ্গি সংগঠনের প্রধান, বিশ্বের এক নম্বর সন্ত্রাসবাদী গতকাল খতম হয়েছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারিভাবে এই কথা জানিয়েছেন। মার্কিন বাহিনীর তাড়া খেয়ে নিজেকে বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত পরিবার সহ নিজেকে উড়িয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে বাগদাদি। এই জঙ্গি নেতার পুরো নাম আবু বকর অল বাগদাদি। গোটা সিরিয়া জুড়েই বাগদাদি সন্ত্রাসের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল, বছর কয়েক আগে নিজেকে খলিফা ঘোষণা করেছিল সে আর সেই সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘরেই প্রাণ গেল তার; ঠিক কি ঘটেছিল ? সাপ্তাহ দুয়েক আগে মার্কিন সেনার হাতে ধরা পারে যায় বাগদাদির এক স্ত্রী। তাকে আটক করে গোপন ডেরায় রাখা হয়েছিল, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় বাগদাদি লুকিয়ে রয়েছে পশ্চিম সিরিয়ার সীমান্তের কাছে ইদলিবের বারিসা গ্রামে। এরপর মার্কিন সেনারা অভিযানের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করতে থাকে। পুরো ব্যাপারটিকে অত্যন্ত গোপনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়;
পরশু দিন মাঝরাতে (সিরিয়ার সময় অনুযায়ী, ভারতে তখন কালীপুজোর ভোর ) বিশ্বের এক নম্বর অসুরকে খতম করল আমেরিকা।বারিসা গ্রামে মাঝরাতেই চিহ্নিত করা বাড়িটির ওপরে হেলিকপ্টারে পৌঁছে যায় মার্কিন বাহিনী। এরপর আকাশ থেকেই বাড়িটির ওপর ও আশেপাশে থাকা গাড়িগুলির ওপর বোমা বর্ষণ করতে থাকে মার্কিন সেনারা।
এরপর একে একে হেলিকপ্টার থেকে নেমে আসে সেনারা, বাড়িটিকে ঘিরে ফেলা হয়, প্রথমে বাড়ির চত্বরটিকে খালি করা হয়; হয় গুলি করে নাহলে আত্মসমর্পণে বাধ্য করে পুরো বাড়িটিকে ফাঁকা করে দেওয়া হয়; এরপর একটি ঘর থেকে খুঁজে বের করা হয় বাগদাদিকে। আমেরিকা থেকে হেলিকপ্টারে করে আনা শিক্ষিত বেশ কিছু কুকুরকে ছেড়ে দেওয়া হয় তাদের দিকে, ঘরে তখন ছিল বাগদাদি নিজে, তার দুই স্ত্রী ও তিন শিশু সন্তান। তারা পালিয়ে একটি গোপন সুড়ঙ্গে ঢুকে পারে। সেই সুড়ঙ্গেও তাকে তাড়া করতে থাকে মার্কিন কুকুরের দল ও সেনারা। শেষ পর্যন্ত সুড়ঙ্গের বন্ধ দেওয়ালে গিয়ে বাগদাদি বুঝতে পারে যে আর বাঁচা সম্ভব নয়; তখন সে প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে কাঁদতে থাকে এবং কাকুতি মিনতি করতে থাকে।
সেনাদের কাছে বাগদাদিকে জীবন্ত বা মৃত যেভাবে হোক ধরার অর্ডার ছিল; আর কোনো ভাবেই বাঁচা সম্ভব নয় দেখে বাগদাদি বিস্ফোরক ভর্তি জামার হাতল টেনে নিজেদের উড়িয়ে দেয়। বিস্ফোরণে মারা যায় বাগদাদি, তার দুই স্ত্রী ও তিন সন্তান। গতকাল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, মৃতদেহগুলি ডিএনএ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হাওয়া গেছে যে বাগদাদি নিহত হয়েছে। এর আগে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে ঠিক যেভাবে পাকিস্তানের এবোটাবাদে ওসামা বিন লাদেনকে গুলি করে মেরেছিল মার্কিন সেনারা, আর পুরো ব্যাপারটি অফিসে বসে দেখেযেছিলেন ওবামা, এবারেও ঠিক সেভাবেই সারা রাত সিচুয়েশন রুমে বসে গোটা অভিযানটিকে সারা রাত ধরে দেখেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
Loading...